খুলনা, বাংলাদেশ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দল ও ধর্মের ভিত্তিতে দেশে কোনো বৈষম্য চায় না জামায়াত
  ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় নোনা পানিতে নিমজ্জিত

জোয়ারে পানি বিপদসীমার উপরে ৩ ফুট পর্যন্ত বৃদ্ধির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক

মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল। ফলে জোয়ারে উপকূলীয় অঞ্চলের নদীতে বিপদসীমার আরও ৩ থেকে ৪ ফুট পানির উচ্চতা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বায়ুতাড়িত জোয়ারে উপকুলীয় জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে খুলনার কয়রা ও পাইকগাছার কয়েকটি পোল্ডারের বেঁড়িবাধ ভেঙে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা এখন নোনা পানিতে নিমজ্জিত। দেশের সর্ববৃহৎ ইউনিয়ন এটি। ২০ মে উপকূলে আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান। সে হিসেবে সর্বশেষ আঘাতের তিনমাস পূর্ণ হল আজ। এরমধ্যে উপকূলে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতে কোন উদ্যোগ নেয়নি পাউবো।

এদিকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার কারণে সমুদ্র ও নৌবন্দরগুলোকে সতর্ক সংকেতও দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি এখন ভারতের বিহার-গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই মোংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এছাড়া উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা বরিশাল, পিরোজপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে বলে পাউবো কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

ইতোমধ্যে জোয়ারের পানিতে খুলনার কয়রা উপজেলা সদর, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন, পাইকগাছা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, আম্পানে যে ক্ষতি হয়নি; অধিক উচ্চতার জোয়ারে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার

 

অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে দুই নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘন্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, শুক্রবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যা নাগাদ খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রাজশাহী, ঢাকা ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে। আগামী দুই দিন বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। তবে বর্ধিত পাঁচ দিনে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। টানা পাঁচ দিন ধরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও (২০ আগস্ট) দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে এ অঞ্চলে।

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!