সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের হাজরাখালি গ্রামের বেড়ীবাঁধের ভাঙ্গন পয়েন্ট ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার। শুক্রবার দুপুরে তিনি হাজরাখালীর পাউবো’র ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধ ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমি প্রতিনিয়ত আপনাদের এলাকার মানুষের দুঃখ, দুর্দশার কথা ভাবছি এবং দ্রুত আপনাদের বাঁধ কিভাবে করা যায় সে ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি। কিন্তু জোয়ারের পানি না কমলে বাঁধের কাজ করার সম্ভব হবে না। তবে দুই পাশ দিয়ে জোয়ারের পানির চাপ কমলে সময়মত স্থায়ী ভেড়ীবাঁধের কাজ করা হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান ক্লোজারের মুখে আগামী পরশু স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প রিং বাঁধের কাজ শুরু করা হবে। সাধারণ মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেজন্য ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে সাইক্লোন সেল্টার, স্কুল, কলেজে আশ্রয় নিতে হবে। তাদের সকলের বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই মুহুর্ত্বে আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি কেউ যেন খাবার সংকটে না পড়ে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের তালিকা করা হয়েছে। এছাড়া সবাইকে ঋণ দেওয়া হবে।
এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সুধাংশু শেখর সরকার, এসি আবুল হোসেন, শ্যামনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন, আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলিফ রেজা, কয়রা উপজেলা নির্বাহী আফিসার অনিমেশ বিশ্বাস, সহকারী কমিশনার মোঃ নুরিআলম সিদ্দিকী, আশাশুনি থানার অফিসার ইনর্চাজ মোঃ গোলাম কবির, শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলমগীর আলম লিটনসহ সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে হাজরাখালী পয়েন্টে পাউবো’র ভেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে শ্রীউলা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। ফলে প্লাবিত এলাকার অধিকাংশ মানুষ ঘরবাড়ি হারা হয়ে গত ৩ মাস ধরে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছিল। ভাঙ্গন পয়েন্ট থেকে বেশ দূরে কোন রকমে বিকল্প রিং বাধ দিয়ে ইউনিয়নের বাকি এলাকার মানুষদেরকে সে যাত্রা রক্ষা করা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু গত ২০ আগস্ট খোলপেটুয়া নদীর পানির প্রবল জোয়ারের চাপে ওই রিং বাঁধ ভেঙ্গে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়।
শ্রীউলা ইউনিয়নের প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন শেষে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন।
খুলনা গেজেট/এমআর