খুলনা, বাংলাদেশ | ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  শেখ হাসিনাসহ তিনজনের পক্ষে অভিযোগ গঠনে সময় আবেদন, পরবর্তী শুনানি ৭ জুলাই
  মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির
  আজ সব ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: ফিরে দেখা ১ জুলাই

গেজেট ডেস্ক

২০২৪ সালের ১ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সংগঠিতভাবে আন্দোলন শুরু হয়। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের পর রাজু ভাস্কর্যে সমাবেশ হয়। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রন্থাগারের সামনে অবস্থান নেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে কলাভবন ও মল চত্বর হয়ে মাস্টারদা সূর্য সেন হল, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ও বসুনিয়া তোরণ হয়ে আবার টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে ফিরে আসেন। পরে সেখানে সমাবেশ হয়।

সেই সমাবেশ থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সমাবেশে পরের তিন দিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন নাহিদ ইসলাম। সেই ঘোষণার পর ২, ৩ ও ৪ জুলাই মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম (বর্তমানে এনসিপির আহ্বায়ক) বলেন, ‘৪ জুলাইয়ের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের দাবির বিষয়ে চূড়ান্ত সুরাহা করতে হবে। আমাদের আশ্বস্ত করতে হবে, যাতে কোটাব্যবস্থার চূড়ান্ত ফয়সালা করা হয়।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে গ্রন্থাগার খোলা থাকতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীদের হলসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো হল বন্ধ করা যাবে না, গ্রন্থাগারও বন্ধ করা যাবে না। প্রত্যয় স্কিমের (সরকারের সর্বজনিন পেনশন কর্মসূচি) বিরুদ্ধে শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করি; কিন্তু আমাদের সুযোগ-সুবিধাগুলো (গ্রন্থাগার, হল ও মেডিকেল) যেন বন্ধ না হয়।’

১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা–আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরাও।

কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে ছিল পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া।

এর আগে ২০২৪ সালের ৫ জুন সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ ছিল। যদিও ৪ জুলাই সেই শুনানি সেদিন হয়নি।

১ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনে মাঠপর্যায়ে সংগঠকের ভূমিকায় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু বাকের মজুমদার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই সমন্বয়ক এখন নতুন ছাত্রসংগঠন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন। আন্দোলনের শুরুর দিনের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ১ জুলাই দেশের ১১টি স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে একই সঙ্গে আন্দোলনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন তাঁরা। এ ছাড়া আরও ছয়-সাতটি জায়গায় ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’ ব্যানারে একই উদ্দেশ্যে আন্দোলন হয়। ১ জুলাইয়ের এটা একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল। সংগঠিত আন্দোলন জুলাই থেকে শুরু হলেও এর নেপথ্যে জুন মাসও ছিল অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!