দেশে করোনার ভারতীয় ধরন ছাড়ানো ও সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়া সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে বিশেষ লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। জোরদার করা হয়েছে বিজিবির টহল। এরপরও থেমে নেই অবৈধ অনুপ্রবেশ। পাচারের নিরাপদ রুটে পরিনত হয়েছে জীবননগরের বিভিন্ন সীমান্ত। দালালদের দৌরাত্ম্যে এই সীমান্ত দিয়ে বেড়েছে ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনা।
বুধবার (১৬ জুন) সকাল ৭টার সময় অবৈধভাবে ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে জীবননগরে বিজিবি’র হাতে নারী, পুরুষ ,শিশু ও দালালসহ আটজন বাংলাদেশী নাগরিক আটক হয়েছে।
বিজিবির মহেশপুর ৫৮ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান জানান, মহেশপুর ব্যাটালিয়ন (৫৮ বিজিবি) এর অধীনস্ত জীবননগর বিওপি’র বিজিবি সদস্যরা বুধবার সকালে উপজেলার হাসাদাহ বাসস্ট্যান্ডে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানকালে অবৈধভাবে ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশের অপরাধে পারাপারে সহায়তাকারী দুইজন দালালসহ আটজন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, খুলনা জেলার ফুলতলা থানার দামুদা গ্রামের মৃত আব্দুল সাত্তার এর ছেলে মোঃ মিঠু শেখ (৩৯), সাথে তার স্ত্রী তানিয়া বেগম (৩৩), ডুমুরিয়া থানার চিচড়ি গ্রামের ইমন আলী সরদার এর ছেলে মোঃ আব্দুল হালিম (৪০), রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ থানার নতুনপাড়া গ্রামের মৃত আলী আহমদ এর স্ত্রী রশিদা বেগম (৫৫), নড়াইল জেলার কালিয়া থানার মাধবপাশা গ্রামের কিশলো মৃধা এর ছেলে সুজন মৃধা (১৫), কালিয়া গ্রামের মোঃ আব্দুস ছামাদ এর ছেলে মিলন হোসেন (৩৩) এবং অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের সহায়তাকারী ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানার শ্যামকুড় গ্রামের রায়হান মোল্লা এর ছেলে মোঃ সাদ্দাম হোসেন (৩০) এবং পীরগাছ গ্রামের মুনসুর আহমেদ এর ছেলে মোঃ সেলিম (৩৩)।
আটককৃত ছয় বাংলাদেশী নাগরিকদের অবৈধভাবে ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করার অপরাধে এবং আটককৃত দুই দালালকে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারে সহায়তা করার অপরাধে পাসপোর্ট অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১১ (১) (গ) ধারায় জীবননগর থানায় মামলা দায়ের ও সোপর্দ করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সীমান্ত এলাকায় তথ্য নিয়ে জানা গেছে, মহেশপুর -জীবননগর সীমান্তে মানুষ পারাপারে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে। বিভিন্ন সময় ভারতে থাকা বাংলাদেশী নাগরিকের সঙ্গে ওপারের দালালরা যোগাযোগ রাখে। অর্থের বিনিময়ে রাতের আধারে এপারের দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।
প্রাপ্ত তথ্য মতে বিজিবির হাতে আটকের চেয়ে অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা আরো বেশি। বিজিবির হাতে খুব কম সংখ্যক আটক হচ্ছে।
সীমান্তে বসবাসকারীরা জানান, মহেশপুর -জীবননগর সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশকারীরা নিরাপদ রুট হিসাবে ব্যবহার করছে। এসব এলাকা দিয়ে প্রায়ই অবৈধভাবে মানুষ যাতায়াত করে তবে গভীর রাতে বেশি যাতায়াত হয়। ভারত থেকে রাতের আধারে লোক এসে সীমান্ত অতিক্রম করে বিভিন্ন বাড়িতে আশ্রয় নেন। মূলত এক শ্রেনীর দালালের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে যাতায়াত করে।এদের কাছে কোনো দেশেরই বৈধ পাসপোর্ট বা ভিসা নেই।
খুলনা গেজেট/ এস আই