খুলনা, বাংলাদেশ | ২ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প

জি-২০ ঘোষণার প্রশংসায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য, হতাশ ইউক্রেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতে শেষ হয়েছে গ্রুপ অব টোয়েন্টি বা জি-২০ জোটের শীর্ষ সম্মেলন। সম্মেলনের প্রথমদিনেই সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সবার সম্মতিক্রমে গৃহীত হয় আয়োজক দেশ ভারতের উত্থাপিত ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’। ওই ঘোষণায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও ধরনের নিন্দা জানানো হয়নি।

অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য এরপরও জি-২০ যৌথ ঘোষণার প্রশংসা করেছে। অন্যদিকে হতাশা প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে জি-২০ যৌথ ঘোষণার প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এই ঘোষণাকে আস্থা অর্জনের জন্য একটি ‘উল্লেখযোগ্য মাইলফলক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করতে প্রয়োজনে জি-২০ ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।

অন্যদিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, জি-২০ সম্মেলন থেকে দেওয়া যৌথ ঘোষণায় ইউক্রেনের যুদ্ধ সম্পর্কে ‘খুব কঠোর ভাষা’ রয়েছে। এই ঘোষণায় দৃঢ় ভাষা, খাদ্যের দাম এবং খাদ্য নিরাপত্তার ওপর যুদ্ধের প্রভাব তুলে ধরা হয়েছে।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মিত্র হওয়া সত্ত্বেও ইউক্রেন এই ঘোষণাকে সেভাবে দেখছে না। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেনকো বলেছেন, জি-২০ জোটের ‘গর্ব করার মতো কিছু নেই’। তিনি বিশেষভাবে ঘোষণার একটি অংশ তুলে ধরেন যেখানে ‘ইউক্রেনের যুদ্ধ’ বলা হয়েছে। আসলে কিয়েভ এটিকে ‘ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ বলতে পছন্দ করে।

অবশ্য ‘যারা এই ঘোষণায় (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) কঠোর ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছেন’ তাদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ওলেগ নিকোলেনকো।

অন্যদিকে রাশিয়া জি-২০ ঘোষণাকে ভারসাম্যপূর্ণ বলে অভিহিত করেছে। রুশ বার্তাসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স অনুসারে রাশিয়ার জি-২০ আলোচক স্বেতলানা লুকাশ যৌথ ঘোষণাকে ‘ভারসাম্যপূর্ণ’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, ‘ইউক্রেন ইস্যুতে খুব কঠিন আলোচনা হয়েছে।’

লুকাশ বলেন, ‘যৌথ ঘোষণায় সম্মত হতে সম্মেলনের আগে প্রায় ২০ দিন এবং এখানে পাঁচ দিন সময় লেগেছিল।’

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দিল্লি সম্মেলনে যোগ না দিলেও রাশিয়া এই যৌথ বিবৃতিতে সম্মত হয়েছে। মূলত পুতিন নিজের পরিবর্তে তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভকে ভারতে পাঠিয়েছিলেন।

সংবাদমাধ্যম বলছে, শনিবার সম্মেলনের প্রথমদিনই সদস্যরাষ্ট্রগুলোর সবার সম্মতিক্রমে গৃহীত হয় সম্মেলনের আয়োজক দেশ ভারতের উত্থাপিত ‘নয়াদিল্লি ঘোষণা’। ওই ঘোষণায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও নিন্দা জানানো হয়নি। তবে কোনও অঞ্চল দখলের জন্য শক্তি ব্যবহার না করতে সকল রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে ওই ঘোষণায়।

সংবাদমাধ্যম বলছে, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা করার পক্ষে ছিল। কিন্তু রাশিয়া, চীন তা মানতে রাজি ছিল না। ভারতও এই যুদ্ধে কারও পক্ষই নেয়নি। ফলে তারা এমন একটা অবস্থান নিতে চাইছিল, যাতে সর্বসম্মতভাবে বিষয়টি নিয়ে এগোনো যায়।

আর এটাই ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কূনীতিকদের জন্য পরীক্ষা ও চ্যালেঞ্জ। শেষপর্যন্ত ভারত সেই পরীক্ষায় সফল হয়েছে। শনিবার সকলের সম্মতিতে ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়।

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে দিল্লি ঘোষণাপত্রে মোট সাতটি পয়েন্ট আছে। ওই ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বে যুদ্ধ ও অন্য সংঘাতের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে। মানুষের কষ্ট বাড়ছে বলে আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আমরা বালিতে যে আলোচনা করেছিলাম, তা মনে করিয়ে দিয়ে আবার বলতে চাই- আমরা আমাদের জাতীয় অবস্থানের কথা বলেছি এবং জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ও নিরাপত্তা পরিষদে যে প্রস্তাব নেওয়া হয়েছিল তার কথা বলেছি। সেখানে বলা হয়েছে, কোনও দেশ যেন জোর করে অন্য দেশের জমি দখলের এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা না করে। পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি একেবারেই মানা যায় না।’

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!