খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীতে ফার্মগেটে বণিজ্যিক ভবনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৫ ইউনিট কাজ করছে
  গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহত
  ঝিনাইদহে ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাক চালকের মৃত্যু

জিয়ার রাজনীতি ছেড়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে আসা প্রমোশন : শাহজাহান ওমর

গেজেট ডেস্ক

ভোট বর্জনের নীতির সঙ্গে দ্বিমতের কারণেই আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। তবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে কোনো চাপের কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। বরং প্রশ্ন তুলেছেন, ১৭ বছর এলাকার জন্য কিছু করতে পারিনি। আর কতবার নির্বাচনের বাইরে থাকব। এখন আমার বয়স ৭৭। নির্বাচন আবার আসছে। তা কী করার আছে? বিএনপি তো নির্বাচনে যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কারওয়ান বাজারে নিজের চেম্বারে তিনি এসব কথা বলেন।

শাহজাহান ওমর বলেন, জিয়াউর রহমানের রাজনীতি ছেড়ে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে আসা আমি তো মনে করি প্রমোশন। জিয়ার রাজনীতি থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি বেটার। আমি মনে করি, বিএনপির ২০১৪ সালে নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল। ২০১৮ সালে যাওয়া মিসটেক ছিল, এবার যাওয়া উচিত ছিল। নির্বাচনে গিয়ে দেখতাম কত প্রকার কারচুপি হয়, জালিয়াতি হয়, সেটা পরীক্ষা হতো। জনগণ দেখত বিএনপি নির্বাচনে আসছিল, ভোট সুষ্ঠু হয়নি, কারচুপি হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বীরত্বের জন্য বীরউত্তম খেতাব পাওয়া এই নেতা বলেন, ১৭ বছর আমার এলাকার জন্য কিছু করতে পারিনি। এলাকার লোকজন মামলা-মোকাদ্দমায় জর্জরিত। তারা অতীতে আমাকে এমপি করেছিল। এখন আমার কিছু দায়িত্ব তাদের প্রতি রয়েছে। সেজন্য নির্বাচনে অংশ নিতে আমি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি।

২০১৪ সালে নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করে শাহজাহান ওমর বলেন, বিএনপি এবার যেন ভোটে আসে, সে জন্য কারাগারে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ইতিবাচক মনোভাবও দেখিয়েছিলেন। পরে কী হয়েছে জানি না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর জানান, বিএনপিকে ভোটে আনতে রাজি করাতে অনেক চেষ্টা করেছেন তিনি। তিনটি শর্তে ভোটে আসতে রাজি ছিলেন ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি, মহাসচিব মির্জা ফখরুল, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মজিবুর রহমান সরোয়ার কেরানীগঞ্জে (ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার) একসঙ্গে ব্রেক ফাস্ট করলাম। সেখানে আমি বলেছি, নির্বাচনে যাওয়া উচিত। মহাসচিব বললেন, ‘হ্যাঁ যাব, তিনটি কন্ডিশনের (শর্ত) কথা বললেন। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার, ফ্রি ফেয়ার নির্বাচনের একটা অঙ্গীকার বা প্রেক্ষাপট। আমরা এগ্রি (রাজি) করেছি। পরে আমি, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আলতাফ হোসেন চৌধুরী কাশিমপুর কারাগারে গেলাম। এরপর আমরা আলাদা আলাদা, উনারা কী করেছেন জানি না।

কোনো চাপের কারণে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিসের চাপ। নো চাপ।

জামিন আদেশের সঙ্গে ভোটে আসার সিদ্ধান্তের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে সাবেক এই বিএনপি নেতা বলেন, সুপ্রিম কোর্টে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে বিচারিক আদালত জামিন আবেদন বিবেচনা করেছেন। আমার আগে অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, তিন আইনজীবী আগাম জামিন পেয়ে জেলা আদালতে হাজির হয়েছেন, জামিন পেয়েছেন। আমি জামিন পেয়েছি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বিবেচনায়।

তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শাহজাহান ওমর বলেন, আমি তারেক রহমানের নেতৃত্ব নিয়ে বলছি না। তরুণ বলেন, সবুজ বলেন আর বৃদ্ধ বলেন, এটা কেমন যেন একটা রাজনীতি। আমার চরিত্রের সঙ্গে মিলমিশ হয় না। বিএনপির রাজনীতি ইয়াং ছেলেপেলে কন্ট্রোল করবে নাকি মেধাবী ও রাজনৈতিক সচেতনরা কন্ট্রোল করবে, এটাই আমার ক্ল্যাশ। আমি দেখেছি এখন রাজনীতিতে আছে কচিকাচার দল। এটা তো আমি মানতে পারি না। শুধু তারেক রহমান একা না। আরও যারা আছে, সব মিলিয়ে আমি তাদের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতে পারছিলাম না।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান আমার টিচার ছিলেন পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমিতে। উনার ডাকে আমি সাড়া দিয়েছি। উনি আমাকে স্নেহ করতেন। বেগম জিয়াও আমাকে স্নেহ করেন। তিনি আমাকে ভালো জানেন। বেগম জিয়ার আমি তো এখন কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ দেখি না। জিয়াউর রহমানের রাজনীতি করেছি, হি ওয়াজ গুড ম্যান, ফ্রিডম ফাইটার বীরোত্তম। বেগম জিয়ার রাজনীতি করা সাজে। এরপরে কতখানি সাজে?

প্রসঙ্গত, শাহজাহান ওমর ১৯৭৯ সালে বিএনপির হয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচনে ঝালকাঠি-১ আসনে একটি ছাড়া সব কটিতেই বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!