বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘কেউ মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান অস্বীকার করবে, এটা আমরা ভাবতেও পারি না।’ সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
বুধবার সিঙ্গাপুর থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি গণমাধ্যমকে এই প্রতিক্রিয়া জানান। উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৩০ জানুয়ারি মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুরে যান।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমান শুধু স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি, তিনি সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশের জনগণের কাছে অতি জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। তাঁর এই অবদান কেউ অস্বীকার করবে, এটা আমরা ভাবতেও পারি না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিএনপি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে। প্রতিবাদ কর্মসূচিও দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘যাঁরা জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাঁরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করেন কি না, আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।’ মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, এমন সিদ্ধান্ত গোটা দেশবাসী অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যান করবে এবং এর প্রতিবাদে সোচ্চার হবে।
এদিকে সাবেক রাষ্ট্রপতি, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তকে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি চরম অবমাননা বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। বুধবার গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এটা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত কি সেটা এখনো আমরা জানি না। যদি সরকারের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের চরম অবমাননার শামিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ শেষ রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে রিভোল্ট করে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছেন এটা সকলেই জানেন। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। স্বাধীনতার পরে মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে সর্বোচ্চ খেতাব (বীর উত্তম) পেয়েছেন তিনি।
আর এখন স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে যদি সরকার এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে এটা হবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রতিফলন। এ ধরনের সিদ্ধান্ত এদেশের জনগণ গ্রহণ করবে না। জনগণের মনে ও জাতির ইতিহাসে শহীদ জিয়ার মুক্তিযুদ্ধের অবদান কেউ খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
উল্লেখ, গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভায় জিয়াউর রহমানসহ বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি শরিফুল হক ডালিম, নুর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিন খানের বীর মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্তগুলো সুপারিশ আকারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর গেজেট বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম