বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, কবি, সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার বলেছেন, গণঅভ্যূত্থান ঘটিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। জিয়াউর রহমানের ইমেজের কাছে পরাস্থ গোষ্ঠী তাকে নিয়ে কুৎসিত, জঘণ্য, মিথ্যাচারে জড়িত অভিযোগ করে পাড়ায় মহল্লায় জিয়া বিদ্বেষীদের তালিকা তৈরির আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এদের কাজের উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে। প্রজাতন্ত্রের কর্মীদেরকে কোন দলের কর্মীর মতো আচরণ না করে ন্যায়ানুগ আচরণ করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সংশোধন হন, নতুবা সমুহ বিপদ আছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনায় বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। বুধবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে এ কর্মসুচি পালিত হয়।
আবদুল হাই শিকদার বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ এবং রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান এক ও অভিন্ন স্বত্তা। পৃথিবীর বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কদের শাসন ব্যবস্থার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, এক জিয়াউর রহমান দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে যে অবদান রেখেছেন এবং পরবর্তীতে স্বতন্ত্র বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের পরিচয় দান করেছেন তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের পর্বত সমান ইমেজের সামনে আর কারও ইমেজ দাঁড়াতে পারেনা। আওয়ামী লীগের যেখানে ব্যর্থতা সেখানেই জিয়ার সফলতা। এজন্য এই শাসক গোষ্ঠী সর্বশক্তি নিয়ে জিয়ার ইমেজকে কালিমালিপ্ত করতে ঝাপিয়ে পড়েছে।
কবি শিকদার বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের জন্মদিনকে আমাদের উৎসবের দিন আনন্দের দিন, হিসেবে পালনের কথা ছিল। কিন্ত আজ গণতন্ত্রের সংগ্রামের আপোসহীন নেত্রী আমাদের মা বেগম খালেদা জিয়া জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি কারাবন্দী। গণঅভ্যূত্থান ঘটিয়ে অসুস্থ মাকে কারামুক্ত করতে হবে। তারেক রহমান হবেন আগামীর বাংলাদেশের লেলিন অথবা আহমদ শাহ পাহলভী। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। টেক ব্যাক বাংলাদেশ শ্লোগান উচ্চারণ করে তিনি বলেন, দেশ থেকে গণতন্ত্র হারিয়ে গেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হারিয়ে গেছে, জনগনের ন্যায়সঙ্গত অধিকার সমূহ হারিয়ে গেছে। লড়াইয়ের মাধ্যমে সকল হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। প্রশিক্ষিত রাজনৈতিক কর্মী তৈরির ওপর গুরুত্বআরোপ করে তিনি বলেন, প্রশিক্ষিত বাহিনী ছাড়া যুদ্ধে জয়লাভ করা যাবেনা। তিনি জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ প্রবন্ধটি পাঠের জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহবান জানান।
বিকেল ৩টায় কর্মসূচির শুরু হলেও বহু আগে থেকেই মহানগর ও জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক মিছিল এসে সভাস্থলে পৌছাতে থাকে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনা। প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল ও খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু।
আলোচনায় অংশ নেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি শেখ মুজিবুর রহমান, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তরিকুল ইসলাম জহির, খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাড. গাজী আব্দুল বারী, বিএফইউজের সাবেক সহ সভাপতি অ্যাড. ড. জাকির হোসেন, বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. এস আর ফারুক, বারের সাবেক সভাপতি অ্যাড. নুরুল হাসান রুবা, বিএফইউজের সহ সভাপতি মো: রাশিদুল ইসলাম ও শিক্ষক সমিতির নেতা অধ্যাপক মনিরুল হক বাবুল।
সভা সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু।