ইরান-সমর্থিত বাহিনী সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপকূল থেকে একটি তেল ট্যাঙ্কার ছিনতাই করেছে বলে ইসরাইলি ও আরো কয়েকটি দেশের মিডিয়ায় অভিযোগ করা হয়েছে। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে।
জেরুসালেম পোস্টের খবরে তিনটি সামদ্রিক নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে যে ইরান-সমর্থিত বাহিনীই পানামার পতাকাবাহী অ্যাসফল্ট প্রিন্সেস নামের ওই তেল ট্যাঙ্কারটি ছিনতাই করেছে। এর আগে ব্রিটেনের সামুদ্রিক বাণিজ্য সংস্থা ট্যাঙ্কারটি ‘সম্ভাব্য ছিনতাইয়ের’ কবলে পড়েছে বলে খবর প্রকাশ করে।
অন্যদিকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মঙ্গলবার সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলের কাছে কয়েকটি জাহাজ নিরাপত্তাগত জটিলতায় পড়ার যে খবর পাওয়া গেছে তা ‘সন্দেহজনক।’ ইরানের বিরুদ্ধে ‘ভুয়া পরিবেশ’ সৃষ্টির যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে ইরানি মন্ত্রণালয়।
এদিকে ইরানি সংবাদ সংস্থা পার্স টুডের খবরে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত উপকূলের কাছে ওমান সাগরে অন্তত চারটি জাহাজ সতর্কতামূলক বার্তা পাঠিয়েছে যা প্রমাণ করে অস্পষ্ট কারণে এসব জাহাজ তাদের স্টিয়ারিং-এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। কুইন এমাথা, গোল্ডেন ব্রিলিয়ান্ট, জাগ পুজা ও অ্যাবিস নামের ওই চার জাহাজ তাদের অটোমেটিক আইডিন্টিফিকেশন সিস্টেম বা এআইএস ট্র্যাকারের সাহায্যে মঙ্গলবার ঘোষণা করে জাহাজগুলো তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই।
সাগরে চলাচলকারী জাহাজগুলোর তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহকারী ওয়েবসাইট মেরিন ট্রাফিকডটকম এ খবর জানিয়েছে। সমুদ্রে চলাচলকারী কোনো জাহাজ যখন ‘নট আন্ডার কমান্ড’ পরিভাষা ব্যবহার করে সতর্কবার্তা প্রকাশ করে তখন ধরে নেয়া হয় অজানা কোনো কারণে জাহাজটি নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। আলোচ্য চারটি জাহাজ মঙ্গলবার ওই পরিভাষা ব্যবহার করে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে।
আরব আমিরাতের ফুজাইরা বন্দর থেকে ৬১ নটিক্যাল মাইল (১১৩ কিলোমিটার) পূর্বে ওমান সাগরের এই ঘটনার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে ব্রিটিশ মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন্স বা ইউকেএমটিও এ ঘটনাকে ‘নন-পাইরেসি ইনসিডেন্ট’ বা ‘অ-জলদস্যুসুলভ ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেছে।
সংস্থাটি বিস্তারিত আর কিছু না জানিয়ে বলেছে, ওই এলাকা দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলো যেন ‘সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক’ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তবে পরে ব্রিটিশ মেরিটাইম এজেন্সি এ ঘটনাকে ‘সম্ভাব্য ছিনতাই’ বলে ঘোষণা করে।
ওমান সাগরে গত সপ্তাহে ইসরাইলি মালিকানাধীন একটি তেল ট্যাংকারে সন্দেহজনক হামলায় দুই ক্রু নিহত হওয়ার এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে একই সাগরে এ ঘটনা ঘটল। ইসরাইল, ব্রিটেন ও আমেরিকা একযোগে ওই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করলেও তেহরান কঠোর ভাষায় ওই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে একে ‘শিশুসুলভ’ আচরণ বলে উল্লেখ করেছে।
এছাড়া, ব্রিটেন ও আমেরিকা ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে ইসরাইলকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় তেহরান বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে যেকোনো ‘হঠকারিতার তাৎক্ষণিক কঠোর জবাব’ দেয়া হবে।
সূত্র : পার্স টুডে ও জেরুসালেম পোস্ট
খুলনা গেজেট/কেএম