প্রসারণশীল এবং জলরোধী একধরনের কাপড় থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। এমনই এক কাপড় উদ্ভাবন করেছে সিঙ্গাপুরের নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (এনটিইউ) এবং চায়নার সিনহুয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এ কাপড়টি শরীরের ক্ষুদ্রতম নড়াচড়া থেকে উৎপন্ন শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে পরিণত করতে পারে।
কাপড়টিতে একটি পলিমার রয়েছে যা যান্ত্রিক চাপকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখান যে, নতুন এ উদ্ভাবিত কাপড়ের ৩ সেমি x ৪ সেমি টুকরোতে টোকা দিলে ১০০টি এলইডি বাতি জ্বালানোর মতো যথেষ্ট বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন হয়।
বিজ্ঞানীদের তৈরি করা প্রোটোটাইপ কাপড়টি দুটি উপায়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। যখন এটিকে চাপা হয়, তখন এ চাপ থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। এ পদ্ধতিকে বলে পিজোইলেকট্রিক ক্রিয়া। আবার যখন এটি অন্য কোনো উপাদানের (যেমন ত্বক অথবা রাবারের গ্লাভস) সংস্পর্শে আসে বা এদের সঙ্গে ঘর্ষণে লিপ্ত হয়, তখনো বিদ্যুৎ তৈরি হয়। ঘর্ষণ অথবা সংস্পর্শ থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এ প্রক্রিয়ার নাম হলো ট্রাইবোইলেকট্রিক প্রভাব।
ফেব্রিক প্রটোটাইপটি তৈরি করার জন্য, এটিতে বেস লেয়ার হিসাবে প্রসারণশীল পাতলা সিনথেটিক কাপড় (স্প্যান্ডেক্স) ব্যবহার করা হয়েছে।
এ গবেষণার টিম লিডার অধ্যাপক লি বলেন, ‘দিনদিন ব্যাটারির ক্ষমতা ও গুণাবলি বৃদ্ধি এবং যন্ত্রপাতি চালনায় বিদ্যুৎ শক্তির চাহিদা হ্রাস পাওয়া সত্ত্বেও পরিধানযোগ্য যন্ত্রপাতিতে ঘনঘন ব্যাটারি পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়। এসব যন্ত্রপাতিতে আমাদের নব্য আবিষ্কৃত প্রটোটাইপটির ব্যবহারে মানুষের দেহের কম্পন থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ শক্তি ব্যাটারির জীবনকাল বাড়াতে পারে। এমনকি এসব যন্ত্রপাতির জন্য শক্তির উৎস হিসাবে আর আলাদাভাবে ব্যাটারি ব্যবহার করতে হবে না।
ফেব্রিক এ প্রটোটাইপ কাপড়টি প্রতি বর্গমিটারে ২.৩৪ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে। কাপড়টি যতই ধোয়া অথবা ভাঁজ করা হোক না কেন, এটি পাঁচ মাস পর্যন্ত স্থিতিশীল বৈদ্যুতিক প্রবাহ বজায় রাখতে পারে।
খুলনা গেজেট/ আ হ আ