জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি সায়েন্স ক্লাব (জেইউএসসি) এর উদ্যোগে “জেএসসি সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেমিনার ২০২৫” সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে “অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ও মাইক্রোবিয়াল মিউটেশন” বিষয়ে আলোচনা করেন খ্যাতনামা অণুজীববিদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সালেকুল ইসলাম।
তিনি ৯৫টির বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং তার কাজের উপর ভিত্তি করে বিশ্বব্যাপী ৩৭০০+ এর অধিক সাইটেশন এবং h-index ৩২ অর্জন করেছেন। এছাড়া, তিনি বিভিন্ন জার্নালসমূহে রিভিউয়ার ও সম্পাদকীয় বোর্ডে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে চলেছেন।
শুক্রবার (৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের সেমিনার কক্ষে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারের অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ও মাইক্রোবিয়াল মিউটেশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন অধ্যাপক সালেকুল ইসলাম। তিনি অণুজীবের জিনগত রূপান্তর, অ্যন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স, অ্যন্টিবায়োটিকের প্রকারভেদ ও কার্যপদ্ধতি, কীভাবে মানবদেহ ধীরে ধীরে অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে উঠছে এবং এর প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সেমিনারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, জাবি সায়েন্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুসা এর সঞ্চালনায় সেমিনারে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সভাপতি মো. সৌরভ। তিনি বলেন, অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বিশ্বব্যাপী ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় এক কোটি মানুষের শরীর অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যাবে। যার প্রভাবে সাধারণ রোগে মানুষ মারা যাবে৷ মারাত্মক এ স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করতে জাবি সায়েন্স ক্লাবের এ আয়োজন।
সেমিনারে ক্লাবের উপদেষ্টা অধ্যাপক কবিরুল বাশার বলেন, আমরা জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চায় কেন যেন পিছিয়ে পড়েছি। সিস্টেম এবং পরিবেশ রক্ষায় কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে। গ্রামের হাতুড়ি ডাক্তার একাধিক এন্টিবায়োটিক একসাথে দিয়ে দেয়। ফলে রোগী ভালো হলেও অন্যান্য এন্টিবায়োটিকের ফলে শরীরে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সসি তৈরি হয়। আমাদের দেশে এন্টিবায়োটিকের সবচেয়ে বড় ঝুঁকির মধ্যে আছে কৃষি এবং লাইভস্টক খাত।
ক্লাবের উপদেষ্টা ও গণিত বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ওসমান গণি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা পাঠদান করেন এবং শিক্ষার্থীরা তা গ্রহন করেন। একাডেমিক কাজের পাশাপাশি সায়েন্স ক্লাব বিজ্ঞানের প্রসার ও জনসচেতনতামূলক এ ধরনের সেমিনার আয়োজন প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শফি মোহাম্মদ তারেক বলেন, আমরা বিজ্ঞানীদের জন্য গবেষণা করি না, আমরা মানুষের জন্য গবেষণা করি। এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে গবেষণাগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। জাবি সায়েন্স ক্লাব সবসময় সৃজনশীল কাজকর্ম করে থাকে৷ জনসচেতনতামূলক এ ধরনের কার্যক্রমের জন্য জাবি সায়েন্স ক্লাবকে ধন্যবাদ জানাই।
খুলনা গেজেট/এএজে