বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আগামী ১৭ জানুয়ারি বসছে সিনেমার সবচেয়ে সম্মানজনক আসর ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯’। করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে এবার বিশেষ ব্যবস্থায় অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছে। থাকছে ৪০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এর সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন অর রশীদ।
তিনি জানান, চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি দুটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে, যার দ্বিতীয়ভাগে থাকবে সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে সিনেমার গানে মঞ্চ মাতাবেন পাঁচ তারকা। এর মধ্যে জুটি বেঁধে মঞ্চে আসবেন ফেরদৌস আহমেদ ও অপু বিশ্বাস, সাইমন সাদিক ও মাহিয়া মাহি এবং নুসরাত ফারিয়া। তারা একাধিক গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করবেন। আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু ও শেষ হবে সাদিয়া ইসলাম মৌ ও ওয়ার্দা রিহাবের দলের নৃত্য পরিবেশনা দিয়ে। এছাড়া গান গাইবেন লিজা ও ঐশীসহ আরও তিন শিল্পী। সমন্বয়ক ও বিটিভির মহাপরিচালক এসএম হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এবার প্রায় সব আগের মতোই থাকবে। পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান ও বক্তৃতা। তবে সবকিছুই হবে সীমিত পরিসরে।’
এদিকে, প্রতিবার প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণের সুযোগ পেলেও করোনার কারণে এবার সেই সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন শিল্পীরা। জানা গেছে, অনুষ্ঠানে স্বশরীরে উপস্থিত থাকবেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেবেন এই আয়োজনে।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মো. সাইফুল ইসলাম (চলচ্চিত্র) বলেন, ‘অন্যান্য বারের মতো এবারেও সবকিছু একই থাকবে। তবে পার্থক্য হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব আগের মতোই হবে।’
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এবার ২৬টি বিভাগে পুরস্কার প্রদান করা হবে। ২০১৯ সালের জন্য আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।
একনজরে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯’ বিজয়ীদের তালিকা :
আজীবন সম্মাননা: মাসুদ পারভেজ (সোহেল রানা) ও কোহিনূর আক্তার সুচন্দা
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: ন’ ডরাই ও ফাগুন হাওয়ায়
শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: নারী জীবন
শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: যা ছিলো অন্ধকারে
শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক: তানিম রহমান অংশু (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা: তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত)
শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী: সুনেরাহ বিনতে কামাল (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা: ফজলুর রহমান বাবু (ফাগুন হওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী: নারগিস আক্তার (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা: জাহিদ হাসান (সাপলুডু)
শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: নাইমুর রহমান আপন (কালো মেঘের ভেলা) ও আফরীন আক্তার (যদি একদিন)
শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক: মোস্তাফিজুর রহমান ইমন (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ নৃত্য পরিচালক: হাবিবুর রহমান (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ গায়ক: মৃণাল কান্তি দাস (তুমি চাইয়া দেখো- শাটল ট্রেন)
শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মমতাজ বেগম (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার) ও ফাতিমা-তুয যাহুরা ঐশী (মায়া, মায়ারে- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ গীতিকার: নির্মলেন্দু গুণ (ইস্টিশনে জন্ম আমার- কালো মেঘের ভেলা) ও কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী (চল হে বন্ধু- মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ সুরকার: প্লাবন কোরেশী (বাড়ির ওই পূর্বধারে- মায়া দ্য লস্ট মাদার) ও তানভীর তারেক (আমার মায়ের আঁচল- মায়া দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার: মাসুদ পথিক (মায়া-দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: মাহবুব উর রহমান (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: জাকির হোসেন রাজু (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: জুনায়েদ আহমেদ হালিম (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
শ্রেষ্ঠ শিল্প নির্দেশক: মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বসু ও ফরিদ আহমেদ (মনের মতো মানুষ পাইলাম না)
শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: সুমন কুমার সরকার (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (ন’ ডরাই)
শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজ-সজ্জা: খন্দকার সাজিয়া আফরিন (ফাগুন হাওয়ায়)
শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান: রাজু (মায়া- দ্য লস্ট মাদার)
খুলনা গেজেট/এ হোসেন