জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধে ও আমাদের ভবিষ্যৎ বিক্রি না করার দাবিতে এবং নবায়ন শক্তির জন্য বিনিয়োগ বাড়ানোর আহবান জানিয়ে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে এক ভিন্নধর্মী প্রতিকী অবস্থান ও জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সকাল নয়টায় শরুব ইয়ুথ টিমের আয়োজনে ও একশনএইড বাংলাদেশের সহযোগিতায় শ্যামনগরের উপকূলীয় এলাকা মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের মথুরাপুর গ্রামের জেলে পাড়ার খোলপেটুয়া নদীর তীরে এই জলবায়ু ধর্মঘট কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
জীবাশ্ম জ্বালানী বৈশ্বিক ঊষ্ণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এবং দ্রুত জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য একটি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। কল-কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিবহন খাত প্রতিনিয়ত যে হারে জীবাশ্ম জ্বালানী ব্যবহার করে, তার ফলে বৈশ্বিক ঊষ্ণতা তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও গ্লোবাল নর্থের সম্পদশালী উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে মূলতঃ যুদ্ধ সংগঠিত করা এবং যুদ্ধের জন্য মদদ দেওয়া, নব্য-ঔপনেবেশিক শোষণ ও মানাবাধিকার লংঘনের মাধ্যমে। তারা এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নির্গমনকারী। তাদের পূজিবাদী মনোভাবের জন্য তারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধ করার জন্য কোন কারিগরি জ্ঞানের দরকার নাই, শুধুমাত্র নিজেদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সেটা বাস্তবায়নই যথেষ্ট বলে মনে করেন উপকূলীয় অঞ্চলের জলবায়ু যোদ্ধারা।
এই শান্তিপূর্ণ ধর্মঘটে যুবরা “আমাদের ভবিষ্যৎ বিক্রি করো না”, “জলবায়ুর সুবিচার চাই”, “জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধ কর”, “নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কর” সহ বিভিন্ন শ্লোগান দিয়ে ধর্মঘট কর্মসূচি থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের কাছে তাদের দাবি তুলে ধরেন।
জলবায়ু ধর্মঘটে শরুবের নির্বাহী পরিচালক এস এম জান্নতুল নাঈম বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব তাদের দৈনন্দিন আচরণের মাধ্যমে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের আচরণের পরিবর্তন করতে হবে। আমরা চাই, পশ্চিমা বিশ্ব আমাদের ক্ষতিপূরণ দিবে এবং তারা জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধ করবে।
শরুবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা বলেন, একমাত্র নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে বিনিয়োগ, কার্বন ও গ্রীন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমিয়ে এই ধরাকে জলবায়ু পরিবর্তনের মত বিপর্যয় থেকে রুখে দিতে পারে।
জলবায়ু যোদ্ধা আবিদ হোসেন বলেন, শুধুমাত্র পশ্চিমা বিশ্বই না আমাদের দেশের সরকারকেও নবায়নযোগ্য জ্বালানী ব্যবহারে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
উপকূলের এই জলবায়ু ধর্মঘটে উপস্থিত ছিলেন, তনুশ্রী মন্ডল, রাশিদুল ইসলাম, মাসুদ রানা ,অর্পিতা মন্ডল, হালিমা খাতুন, বিশ্বজিৎ মন্ডল, রাজীব বৈদ্য, হাবিবুর রহমান সহ শরুব ইয়ুথ টিমের বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যবৃন্দ। স্থানীয় অন্যান্য সংগঠন এই ধর্মঘটের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে।
খুলনা গেজেট/এনএম