খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ৪০তম ব্যাচের ক্যাডেট এসআইদের সমাপনী কুচকাওয়াজ স্থগিত
  সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর
  টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ৪ জন নিহত

জনগণের কাছ দুই বিরোধী দলের অবস্থান নেই: প্রধানমন্ত্রী

দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকার আক্ষেপ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে যে দুটি বিরোধী দল রয়েছে জনগণের কাছে তাদের অবস্থান নেই। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন বলে রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা বাসস জানিয়েছে।

ওই সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘অপজিশন বলতে দুটো পার্টি আছে। দুটোই একেবারে সংবিধান লঙ্ঘন করে, আর্মি রুলস ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারি মিলিটারি ডিকটেটরদের হাতে গড়া। জনগণের কাছে তাদের অবস্থান নেই।’

বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ঠিক মাটি ও মানুষের সাথে যে সম্পর্ক থাকে, সেই সম্পর্কটা তাদের মাঝে নেই। তাদের কাছে ক্ষমতাটা ছিল একটা ভোগের জায়গা। সেই ক্ষেত্রে আসলে অপজিশন তাহলে কোথায়? এখানে একটা পলিটিক্যাল সমস্যা কিন্তু আছে।’

বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পেছনে থেকে তাদেরকে উৎসাহ দিয়ে একবার ক্ষমতায় আনতে পারে, যেটা ২০০১ সালে এনেছিল। কিন্তু তার পরিণতি কি ছিল? বাংলাদেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন, বাংলা ভাই সৃষ্টি, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, ৫শ’ জায়গায় একদিনে বোমা হামলা, অপজিশনে থাকা আমাদের ওপর গ্রেনেড হামলা, অপজিশনের অনেক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা।’

তিনি বলেন, ‘এ রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সেই সময় সারা দেশজুড়ে ঘটেছিল যার জন্য ইমার্জেন্সি এলো, এটা হলো বাস্তবতা।’

দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে নানা সমালোচনারে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রের কথা বলতে গেলে অনেক দল দরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, উন্নত বিশ্বে দেখলে আপনারা দেখবেন সেখানে কিন্তু মাত্র দুই দল হয়ে গেছে এখন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দুই দলের বেশি শক্তিশালী দল নাই।

তিনি বলেন, ‘আবার নির্বাচনে আমি তো জানি আমেরিকার প্রায় ২৫ শতাংশ সংগঠন ইলেকশনই করে না। ইলেকশন করার বিষয়ে একটা অনীহা চলে আসে মানুষের। এটাও কিন্তু অনেক দেশে দেখা যাচ্ছে। আমাদের দেশটা ধীরে ধীরে ওরকম হয়ে যাচ্ছে।’

আওয়ামী লীগ সরকারে আসলে এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগই একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা দেশের মাটি ও জনগণ থেকে উঠে এসেছে। এ কারণে দলটির সমস্ত চিন্তাভাবনা সর্বদা দেশ এবং এর জনগণকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত। কারণ মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করেই এই সংগঠনটা তৈরি। কাজেই আমাদের চিন্তা চেতনাটা ওখানেই থাকে।’

ক্ষমতায় থাকা ও দেশ পরিচালনার বিষয়টিকে একটি ‘সুযোগ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার সব সময়ের লক্ষ্য দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। এর মাধ্যমে দেশ আরও এগিয়ে যাবে।’

আগামী প্রজন্মের জন্য উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলায় তিনি তার দেওয়া প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১- এর উল্লেখ করে বলেন, ‘রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছি এখন উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করতে হবে। সময়ের সঙ্গে এই রূপরেখা যুগোপযোগীকরণের মাধ্যমেই বাংলাদেশ আগামীতে এগিয়ে যাবে।’

উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জন্য যেমন বিশাল সুযোগ সৃষ্টি করেছে তেমনি কিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। আমরা প্রতিবন্ধকতাগুলো মোকাবেলা করতে এবং দূর করতে নিয়মিত বৈঠক করছি।’

বাংলাদেশের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে- এমন আশঙ্কা ও দাবির জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পত্রপত্রিকার লেখালেখি পড়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করি না, এটাই বাস্তবতা। কারণ তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারে। বালাদেশ শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছে, এ রকম একটা কথা রটাচ্ছে। আমরা উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা নিচ্ছি, এটা ঠিক। কিন্তু সবসময় আমাদের একটা হিসেব থাকে। আমরা কিন্তু ডিফল্টার না। আমরা যেখান থেকে যত ঋণ নিয়েছি প্রত্যেকটা ঋণ আমরা কিন্তু সময় মতো পরিশোধ করেছি। আমরা কিন্তু যত রকম দুর্দশা হোক, এমনকি করোনার মাঝেও আমরা কিন্তু ঋণখেলাপি হইনি।’




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!