দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছিল শিক্ষা বিভাগ। তবে দেশের ছয়টি জায়গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার খবর পাওয়া যায়নি।
তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামা চার জেলার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে প্রতিবেদক। এর মধ্যে একজন বলেছেন, তাঁরা আজ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করেননি। আরেকজন আজ সন্ধ্যায় বলেছেন, এ নিয়ে তাঁরা সভা করছেন। আরেকজন বলেছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) গতকাল এক আদেশে বলেছিল, দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখা যাবে। মাউশির আঞ্চলিক উপপরিচালকেরা সংশ্লিষ্ট জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ছুটির বিষয়ে নির্দেশ দেবেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ও গতকাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে একই সিদ্ধান্ত দেয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ ছয়টি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমেছে। এলাকাগুলো হলো বান্দরবান, চুয়াডাঙ্গা, বরিশাল, ঈশ্বরদী (পাবনা), শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) ও সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম)।
বান্দরবান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী জানিয়েছেন, তাঁরা আজ কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করেননি। তিনি গতকাল অ্যাপে দেখেছিলেন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রির মতো। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বলা হয়েছে, বেশি শীত পড়লে সেটি যেন তাঁকে জানানো হয়।
চুয়াডাঙ্গার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, সকালে তাপমাত্রা কম থাকলেও দিনের বেলায় তাপমাত্রা বাড়ে। সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় পালায় চলা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দিবা শাখার (দুপুরে শুরু) বিষয়ে কী করা হবে, তা নিয়ে তাঁরা সভা করছেন। এ বিষয়ে আজই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।
বরিশালের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, আবহাওয়া অফিসে ফোন করে তাঁদের পাননি। তবে তাঁরা মোবাইলে (অ্যাপ) দেখেছেন সেখানকার তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়ামের মতো। তাই আগামীকাল সকাল পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মৌলভীবাজারের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, ছুটির কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর মধ্যে প্রাথমিকের ছুটির নির্দেশনায় কিছুটা অস্পষ্টতা আছে। কারণ, তাদের আদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার কথা উল্লেখ আছে। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও কথা হয়েছে।
ছুটির এই নির্দেশনা নিয়ে শুরু থেকেই বিভ্রান্তি দেখা দেয়। আর বিভ্রান্তি তৈরি হয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনার কারণে। তীব্র শীতে স্কুলে ছুটি দেওয়া নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার চার ঘণ্টার মধ্যে তিন রকম নির্দেশনা দিয়েছিল মাউশি। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে প্রথম নির্দেশনাটি দেওয়া হয়। সর্বশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয় রাত সাড়ে আটটার পর।
মাউশি তাদের সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলে, দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে স্কুল বন্ধ রাখা যাবে। মাউশির আঞ্চলিক উপপরিচালকেরা সংশ্লিষ্ট জেলার শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ছুটির বিষয়ে নির্দেশ দেবেন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে একই সিদ্ধান্ত দেয়।
আজ দেশের কোনো জেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি দেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন বলেন, অন্য একটি সভায় ব্যস্ত থাকায় সে তথ্য তাঁর কাছে নেই। তবে তাঁরা পরিষ্কার বলে দিয়েছেন, দিনের তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে নামলে আলোচনার মাধ্যমে স্কুল বন্ধ রাখা যাবে।