খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ পৌষ, ১৪৩১ | ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চাঁদপুরে জাহাজে ৭ জনকে হত্যা: আসামি ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
সংস্কারের দাবি নগরবাসীর

ছোট-বড় গর্তে চলাচলের অনুপযোগী অধিকাংশ সড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা মহানগরীর অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। ছোট-বড় গর্তের কারণে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে গিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে দূর্ঘটনা। সম্প্রতি নগরের সড়কগুলো সংস্কার করে নগরবাসীর দুর্ভোগ নিরসনের জন্য স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়েছে কেসিসি মেয়র বরারব।

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে সংস্কারের কাজ ধীরগতি হলেও সম্প্রতি কেসিসি মেয়র বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন। এছাড়া রাস্তা সংস্কার এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি কতৃপক্ষের। ইতিমধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বড় গর্ত এবং বয়রার বাইপাস লিংক রোডে স্থানীয়দের উদ্যোগে কিছুটা সংস্কার করা হলেও সেটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যবস্থা নয়।

সোনাডাঙ্গা এম এ বাড়ি সড়ক

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর সোনাডাঙ্গা থেকে নতুন রাস্তা সড়কের বেহাল দশা। সড়কটির পাশ্ববর্তী এলাকায় দুটি সরকারি হাসপাতাল, ট্যাক্স ভবন, পুলিশ লাইনসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় প্রতিনিয়ত হাজারো মানুষের যাতায়ত। এছাড়াও নগরী থেকে বাইপাস সড়কের আউটলাইন যথাক্রমে সোনাডাঙ্গা এম বারি সড়ক, শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের সামনের বাস্তুহারা বাইপাস সড়ক এবং নগরীর বয়রা পাবলিক কলেজের মোড়ের সামনের বাইপাস লিংক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও নগরীর খালিশপুরস্থ বিআইডিসি রোড, আলমনগর মোড়, মুহসিন কলেজ মোড়, নগরীর শামসুর রহমান রোড, রূপসা মোড় থেকে শিপইয়ার্ড সড়ক পরিদর্শন করেও বেহাল দৃশ্য দেখা গেছে। ভূক্তভোগীরা জানায়, রাস্তাগুলোতে ভারী যানবাহন দেদারছে চলাচল, গ্যাস লাইনের কাজ করার পর সঠিকভাবে সংস্কার না করা, ওয়াসার পাইপ লাইন কার্যক্রমের সময় সংস্কার করা কাজ পুনরায় ভেঙ্গে যাওয়া এবং দীর্ঘদিনেও অনেক রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় এসব সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

বয়রা বাইপাস লিংক রোড

সোনাডাঙ্গা এলাকার ইজিবাইক চালক সিদ্দিক জানান, সোনাডাঙ্গা থেকে নতুন রাস্তা মোড়ের যে অবস্থা তাতে চলাচল করা যায় না। এমনকি সাইকেলও চালানোর উপযোগ্য নেই অনেক স্থানে। অল্প বৃষ্টিতে রাস্তার বড় গর্ত গুলো ভরে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন অনেক যাত্রী।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ইমরান জানান, বিভাগীয় শহরের রাস্তার যে এমন অবস্থা হতে পারে সেটা না দেখলে বোঝা যেত না। অসুস্থ রোগী হাসপাতালে আনার সময় ঝাঁকুনিতে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।

রূপসার এলাকার বাসিন্দা মাসুম জানান, অল্প বৃষ্টিতে শিপইয়ার্ড সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। এমনকি জোয়ারের পানিতেও রাস্তায় পানি চলে আসে। সড়কে যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয় না এমন দিন খুবই কম।

বৃহত্তর উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি শেখ মোশাররফ হোসেন বলেন, চলাচলের অনুপযোগী সড়কগুলো অতিদ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। তা না হলে নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়ছে। এ বিষয়ে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করছি।

বাস্তুহারা বাইপাস লিংক রোড

নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) এর আহবায়ক এসএম ইকবাল হোসেন বিপ্লব জানান, ইতিমধ্যে সিটি মেয়রকে রাস্তাগুলো সংস্কারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত আমরা নগরবাসীর এই দুর্ভোগ নিরসনের জন্য রাস্তায় নামব।

তিনি আরও বলেন, এমএ বারী লিংক রোড, বয়রা মেইন রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ওয়াসার দায়িত্বহীন খোঁড়াখুড়ি এবং কেসিসি’র ড্রেন নির্মানের নামে সময় দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিটিসিএল-এর খোঁড়াখুড়ির কারনে সড়কগুলোর বেহাল দশা। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গুলোর কোন কোন কার্যক্রম চোখে পড়ে না।

কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী- ২ লিয়াকত আলী বলেন, পাইপ লাইনে গ্যাস টানার কারণে আবু নাসেরের লিংক রোড, মুহসিন কলেজ মোড়, আলমনগরসহ কয়েকটি সড়কের অবস্থা খারাপ হয়েছিল। সেখানে  প্রায় ১০ লাখ দিয়ে সংস্কার করা হয়েছে। অন্যান্য সড়কগুলোর পাশে ড্রেন করার পর রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু হবে। করোনার কারণে কার্যক্রমে কিছুটা ধীরগতি হলেও কেসিসি মেয়র খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলোর সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন। বেশিরভাগ ড্রেনের টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান।

কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ মশিউজ্জামান খান জানান, সোনাডাঙ্গার এম এ বাড়ি সড়ক থেকে বাইপাস সড়কের দুর্দশার বিষয়ে অনেকেই জানিয়েছেন। কিন্তু পুরো সড়কটি আমাদের নয়। ময়ূর নদীর ব্রীজ পর্যন্ত কেসিসির নিয়ন্ত্রণে। পরের অংশ এলজিইডির। আমাদের অংশে রাস্তার পাশে ড্রেন হবে। খুব দ্রুতই কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী তিনি।

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!