খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ কার্তিক, ১৪৩১ | ১৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  চার উপদেষ্টার আশ্বাসে ভোর ৪টায় হাসপাতালে ফিরলেন আহতরা

ছেলে-পুত্রবধুর হাতে নির্যাতনের শিকার সেই স্কুল শিক্ষক অরবিন্দ মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরায় দুই হাত ও পা বেঁধে ছেলে ও পুত্রবধুর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সেই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক অরবিন্দু মন্ডল (৭৩) মারা গেছে। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রোববার (১০ নভেম্বর) বিকাল চারটার দিকে তিনি মারা যান। ধারনা করা হচ্ছে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

মৃত অরবিন্দু মন্ডল সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাঁশতালা রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত সহকারি শিক্ষক ছিলেন।

এদিকে অরবিন্দ মন্ডলের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে দুই সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গেছে তার ছেলে বিশ্বজিৎ মন্ডল ও তার স্ত্রী কবিতা মন্ডল। তবে বাবার মৃত্যুর জন্য দাদা ও বৌদি ছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার মন্ডল, একই গ্রামের কলেজ শিক্ষক গণেশ চন্দ্র গাইনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে প্রায়ত অরবিন্দ মন্ডলের মেয়ে অঞ্জনা মন্ডল।

অঞ্জনা মন্ডল জানান, তার বাবা অরবিন্দ বাঁশতলা রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০১০সালের ৯ জুন অবসরে যান। ক্রমশঃ তার শ্রবণ শক্তি হারিয়ে যায়। বড় দিদি বণলতা সরকার ভারত থেকে বাবার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। অবসরে যাওয়ার পর থেকে দাদা বিশ্বনাথ ও বৌদি কবিতা বাবাকে ভাল চোখে দেখতো না। তাকে কারণে অকারণে নির্যাতন করতো।

বিষয়টি তার বড়দিদি ভারতের নৈহাটীর বাসিন্দা বনলতা সরকার জানতে পেরে স্থানীয় বাবুরাম কাকার ছেলে নকুলকে দিয়ে দাদা-বৌদির দ্বারা নির্যাতনের ছবি ভিডিও করে তাকে পাঠাতে বলে। গত বছর মা চপলা মন্ডল মারা যাওয়ার পর থেকে নিজেই রান্না করে খেতেন বাবা। ছোট কাকা সুভাষ মন্ডল, আত্মীয় স্বজন বা প্রতিবেশীরা তাকে খেতে দিতে চাইলেও ছেলে ও পুত্রবধুর গালাগালির কারণে কেউ খাবার দিতে সাহস পেত না। সে কারণে বাবা নিজেই রান্না করে খেতেন। গত ২ নভেম্বর সকালে বাবাকে বাড়ির উঠানে ফেলে মশারির নেট দিয়ে হাতে ও পায়ে বেঁধে গালিগালাজের পাশাপাশি মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে। এ ঘটনার পর থেকে বৃদ্ধ বাবা খুবই ভেঙে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, রোববার দুপুরে দিকে হঠাৎ করে বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। সাথে সাথে তাকে চিকিৎসকের কাছে নিলে হয়তো ভাল চিকিৎসা পেত। দাদা-বৌদির অবহেলার কারণে অনেক দেরিতে তাকে হাসপাতালে নেওয়ায় চিকিৎসা না পেয়ে পথেই বাবা মারা যায়। বাবা মারা যাওয়ার পর পরই দুই সন্তানকে নিয়ে দাদা ও বৌদি বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!