নানারকম বিভ্রান্তির পর অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সোমবার রাত পৌনে ১ টার দিকে রাজধানীর মিন্টো রোডের গোয়েন্দা কার্যালয় থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আকতার জানান, ডিবি অফিসে নেয়ার পর নুরের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। রাতে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। তার অসুস্থতার কারণে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, নুরসহ ৭ জনকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। নুর কিছুটা অসুস্থবোধ করায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। পরে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে নুরকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে মুচলেকার মাধ্যমে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মৎস ভবন থেকে নূরসহ কয়েকজনকে বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিশৃঙ্খলা চেষ্টার অভিযোগে আটক করা হয়। এরপর তাদের ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন জানান, নূরসহ ৪ জনকে ডিবি পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে আসে। নূরুর বুকে, কোমরসহ কয়েক জায়গায় এক্সরে করা হয়েছে। তার অবস্থা ভালো আছে। তাদেরকে ভর্তি রাখার প্রয়োজন হয়নি। অপর একজনের মাথায় একটু আঘাত আছে, তাকে নিউরোসার্জারি বিভাগে দেখানো হয়েছে।
ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক জানান, নূরের একটু হাপানি সমস্যা ছিল আগে থেকেই। এজন্য তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। রাত ১১টা ৩৫ মিনিটের দিকে নূরকে নিয়ে পেছনের পকেট গেইট দিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করে ডিবি পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে নূরুর সমর্থকদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
এদিকে ডাকসু ভিপি নুরুলহক নুরসহ নেতাকর্মীদের উপর হামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় একযোগে সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সদ্য সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে আটকের পর তার মুক্তি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
সোমবার রাতে ধর্ষণের অভিযোগে মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ থেকে নূরসহ সাতজনকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের কাজে বাধা দেয়া এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে শাহবাগ থেকে তাদের আটক করা হয়। এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর এলেও বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা যুগান্তরকে বলেন, ভিপি নুরসহ আমাদের কয়েকজন সহযোদ্ধার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক ধর্ষণ মামলার প্রতিবাদে আমরা বিক্ষোভ মিছিল করছিলাম।
বিক্ষোভ মিছিলের শেষের দিকে শাহবাগ থেকে পুলিশ ভিপি নুরকে আটক করে। এ সময় পুলিশের অতর্কিত আক্রমণে নুরকে বাঁচাতে গিয়ে আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন। আমি নিজেও আহত হয়েছি।
এর আগে রোববার নুরসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ৬ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুনকে। ধর্ষণে সহযোগী হিসেবে ভিপি নুরকে করা হয়েছে ৩ নম্বর আসামি।
খুলনা গেজেট /এমএম