বাগেরহাটে ৪ আগষ্ট ছাত্রদের মিছিলে হামলার ঘটনায় ৬৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আ.লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, পুলিশ, আইনজীবী, ব্যবসায়ি, আ.লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের ৬৭ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা এক থেকে দেড়শ জনকে আসামী করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাগেরহাট সদর উপজেলার গোটাপাড়া ইউনিয়নের গোপালকাঠি গ্রামের বাসিন্দা জুলাই আগষ্টে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন আন্দোলনে নির্যাতিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মিরাজ সেখ নামে এক ব্যক্তি আদালতে ওই মামলা করেন।
বাগেরহাটের বিচারিক আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক আজমীরা ফেরদৌসী মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে গত বছরের ৪ আগষ্ট সকালে শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা বাগেরহাট আদালত চত্ত্বরে পৌছালে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, বোমা নিক্ষেপ, লাঠিচার্জ ও গুলি বর্ষণ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় পুলিশ ও আওয়ামীলীগের সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, লোহার রড দিয়ে আন্দোলনকারীদের উপর হামলা করে এবং তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা মোবাইলফোন ছিনিয়ে নেয়। হামলায় আন্দোলনকারীদের অনেকেই কমবেশি আহত হন। এই আন্দোলনকারী প্রাণের ভয়ে আদালতে ও থানায় মামলা করতে সাহস পাননি বলে ওই মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার অন্যতম আসামীরা হলেন, বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, সাবেক সংসদ সদস্য মীর শওকাত আলী বাদশা, বাগেরহাটের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাসুদ রানা, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) মো. মামুনুর রশীদ, বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি মো. সাইদুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভূঁইয়া হেমায়েত উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাগেরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র খান হাবিবুর রহমান, জেলা যুবলীগের সভাপতি সরদার নাসির উদ্দীন, জেলা শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক খান আবু বক্কর, জেলা যুব মহিলালীগের সভাপতি লুনা সিদ্দিকী, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ফজলে সাঈদ ডাবলু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার নাহিয়ান আল সুলতান ওশান, ব্যবসায়ি তাপস কুমার সাহা। আসামীর তালিকায় আইনজীবী, পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বাগেরহাট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌসুঁলী (পিপি) এস এম মাহাবুব মোর্শেদ লালন বলেন, নির্যাতিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এক সমন্বয়ক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেছেন। মামলায় সাবেক এমপি, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/ টিএ