খুলনার সাধারণ জনগণের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি প্রণোদনা সহায়তা ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) এর দৈনিক বরাদ্দ বাড়ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, খুলনা মহানগর-এর দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার ফলে এই পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনারের দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ওএমএস-এর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গত নভেম্বরে খুলনা মহানগর ওএমএস যাচাই-বাছাই কমিটিতে দুইজন ছাত্র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তারা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ওএমএস-এর দুর্নীতি হ্রাস করতে সক্ষম হন। পাশাপাশি, তারা ওএমএস-এর দৈনিক বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যান, যার ইতিবাচক ফলাফল এখন দৃশ্যমান।
খুলনা মহানগর ওএমএস ছাত্র প্রতিনিধি আসাদুল্লাহ গালিব বলেন, “বাংলাদেশের শ্রমভুক্ত অঞ্চলগুলোর বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি হওয়ার নিয়ম থাকলেও স্বৈরাচার আমলে খুলনাকে সবসময় বঞ্চিত করা হয়েছে। পূর্ববর্তী আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক খুলনার মতো বিভাগীয় শহরের বরাদ্দ বৃদ্ধি না করে তার নিজ জেলার বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছিলেন। আমরা দায়িত্বে আসার পর সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশা সরাসরি দেখেছি। নিম্নবিত্ত মানুষের সংসার ওএমএস-এর চালের ওপর নির্ভরশীল। অথচ খুলনা মহানগরের ৩১টি ওয়ার্ড থাকলেও দৈনিক মাত্র ২০টি পয়েন্টে ওএমএস খাদ্য বিতরণ হতো, ফলে বহু মানুষ এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতো।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের কাছে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি তুলে ধরলে তিনি আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি বিবেচনা করেন। ফলে আসন্ন রমজান থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে দৈনিক ১টি করে পয়েন্ট চালু করা হবে, যাতে সব শ্রেণির মানুষ ন্যায্যমূল্যে খাদ্য পেতে পারে। বর্তমান আঞ্চলিক খাদ্য পরিদর্শক ইকবাল বাহার চৌধুরী এ বিষয়ে আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা করেছেন।”
ওএমএস ছাত্র প্রতিনিধি আহসানুল হাসান তানঈম বলেন, “আমরা সাধারণ জনগণকে বঞ্চনা থেকে মুক্ত করে তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে পেরে আনন্দিত। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক থেকে শুরু করে বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত সবাই আন্তরিকভাবে আমাদের সহায়তা করেছেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। খুলনার নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য আমরা সবসময় কাজ করে যাবো।
তিনি আরও জানান, নগরীর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ছাত্ররা আরও কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন।
ওএমএস-এর বরাদ্দ বৃদ্ধি সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্তে খুলনার সাধারণ জনগণের মধ্যে স্বস্তির বাতাস বইছে। তারা মনে করছেন, রমজানের আগে এই উদ্যোগ তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, তারা ওএমএস ব্যবস্থার কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখবেন এবং সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে সবসময় মাঠে থাকবেন।
খুলনা গেজেট/এএজে