যশোরের চৌগাছার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার মো: ইউনূচ আলীর বিরুদ্ধে খুচরা বিক্রেতাদের কাছে সার বিক্রি না করে কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ইউনিয়নের চারজন খুচরা ব্যবসায়ী (সাব-ডিলার)।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় প্রেসক্লাব চৌগাছায় তাঁরা এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন বড়খানপুর বাজারের মেসার্স আমিন এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আবুল কালাম আজাদ। এসময় তাঁর সাথে ঝাউতলা বাজারের সোলাইমান ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী মেহেদী হাসান, পেটভরা বাজারের আল-আমিন এন্টারপ্রাইজের সত্বাধিকারী আল-আমিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ইলিশমারী বাজারের ওয়াফিকা ট্রেডার্সের সত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম (মিনু) উপস্থিত না থাকলেও তিনি মুঠোফোনে অভিযোগের বিষয় নিশ্চিত করেন।
লিখিত বক্তব্যে তাঁরা বলেন, আমরা নারায়নপুর ইউনয়িনের ৮জন খুচরা ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্যমূল্যে প্রান্তিক কৃষকের মধ্যে সার বিক্রয় করে থাকি। ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার হলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সেক্রেটারী ও বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক ইউনুচ আলী। যার বাড়ি সিংহঝুলি ইউনিয়নে। বিসিআইসির নিয়মানুযায়ী ইউনিয়নে ৮জন খুচরা বিক্রেতা থাকবে। সে হিসেবে আমরা প্রত্যেকে কৃষি ব্যাংকে ৩০ হাজার টাকা জমা দিয়ে খুচরা বিক্রেতা হিসেবে লাইসেন্স প্রাপ্ত। নিয়মানুযায়ী ডিলার আমাদের (খুচরা বিক্রেতা) মাধ্যমে সার বিক্রির কথা থাকলেও আমাদের ৪জন ডিলারকে তিনি কোন সার দিতে চান না। ডিলারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলে আমাদের সার দেয়া যাবে না। এবিষয়ে আমরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ^াসের কাছে বারবার অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার না পেয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তাঁরা বলেন সার সংকটের কথা বলে তিনি আমাদের সার দেন না। কিছু সার আমাদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করলেও তিনি কোন মেমো দেন না। তাঁদের দাবি ইউরিয়া সার তাদের কাছ থেকে ৮২০ থেকে ৮৫০টাকা বস্তা, ডিএপি ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা বস্তা এবং এমওপি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা বস্তা হিসেবে নিয়ে থাকেন। অথচ সরকারিভাবে কৃষকদের কাছে খুচরা প্রতি কেজি ইউরিয়া ৮টাকা, ডিএপি ৮টাকা ও এমওপি সাড়ে সাত টাকার বেশি বিক্রি করা যাবে না। তাঁরা প্রশ্ন রাখেন আমরাই যদি খুচরা মূল্যের বেশি দামে সার ক্রয় করি তাহলে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করবো কিভাবে?
তবে বিসিআইসি সার ডিলার ইউনুচ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন তাঁদের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁরা আমার কাছ থেকেই সার নেন। সার নেয়ার সময় ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (এসএএও) মুসলিমা খাতুনও উপস্থিত থাকেন। তিনি আরও বলেন তাঁরা যে সার কিনেছেন তাঁর ক্যাশ মেমো আমার কাছে রয়েছে। তাঁর দাবি এই চার বিক্রেতার একজনের কাছে তিনি এখনও বাকিতে সার বিক্রির টাকা পাবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ সত্য হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। দুজন বিক্রেতা আমার কাছে এসেছিলেন। ডিলারকে বিষয়টি মুঠোফোনে জানানো হয়েছিলো। তিনি আরও জানান, চৌগাছায় বর্তমানে সারের কোন সংকট নেই।
খুলনা গেজেট/ টি আই