যশোরের চৌগাছায় ৩৬০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ করা হয়েছে। এর সাথে বেড়েছে পেয়ারা চাষে পলিথিনির ব্যবহার। ফলে হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ। পলিথিনের বিকল্প কি ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে কৃষি অফিস কৃষকদের সাথে নানা ভাবে আলোচনা করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মাটির গুনাগুন ভেদে চৌগাছায় মোট ১৭৫০ হেক্টর জমিতে হরেক রকমের ফলের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে পেয়ারা চাষ হচ্ছে ৩৬০ হেক্টর জমিতে। এক দশকের বেশি সময় ধরে এ জনপদের চাষিরা পেয়ারা চাষ করে আসছেন। হাইব্রিড জাতের পেয়ারা চাষ করে অসংখ্য চাষি আজ স্বাবলম্বী।
কিন্তু পেয়ারা চাষে কৃষক ব্যাপক ভাবে পলিথিন ব্যবহার করছেন। চাষ শেষে সেই পলিথিন ফেলা হচ্ছে চাষযোগ্য জমির কোনে। দীর্ঘদিন মাটিতে পড়ে থাকলেও তা নষ্ট হচ্ছে না। ফলে ফসল উৎপাদনে নানা সমস্যায় পড়ছেন ওই চাষি। আবার পলিথিন ছাড়াও পেয়ারা চাষ সম্ভব হচ্ছে না জানান চাষিরা। বলাচলে বাধ্য হয়ে জমিতে ব্যবহার করছেন ক্ষতিকর পলিথিন।
উপজেলার আন্দারকোটা, টেংগুরপুর, পেটভরা, নারায়ণপুর, হাকিমপুরসহ বেশ কিছু গ্রামের মাঠে দেখা যায় এক একটি পেয়ারা গাছে ৫০ থেকে ১২০টির বেশি করে পেয়ারা ধরেছে। আর ওই পেয়ারা পলিথিনের ব্যাগ দিয়ে মোড়া হয়েছে। পলিথিন ছাড়া পেয়ারা তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি পায় না এবং দৃষ্টিনন্দন রং আসে না বলছেন চাষিরা।
কৃষকরা জানান, পলিথিন ক্ষতিকর জানা সত্ত্বেও এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। পলিথিন ছাড়া পেয়ারার চাষ কখনও করা সম্ভব না। হাকিমপুর গ্রামের কৃষক সোহাগ হোসেন, মাড়ুয়া গ্রামের ফজলুর রহমান বলেন, পলিথিন আর পেয়ারা যেন একই সূত্রে গাঁথা। কেননা পলি ব্যাগ না দিলে সেই পেয়ারা বড় হবে না শুধু বড় না, পেয়ারার কোনো রং বা চেহারা কিছুই ভাল হবে না। এটি ক্ষতিকর একটি জিনিস ভেবেও কিছুই করার নেই।
কৃষি অফিস নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছে কিন্তু তাতে কার্যকর কোনো উপকার না হওয়ায় সকলেই পলিথিন ব্যবহার করছেন। তারা বলেন, বেশ আগে পেয়ারা গাছ হতে তোলার পর পলিথিন যত্রতত্র ফেলে দেওয়া হতো। কিন্তু এখন সেটি হয় না। পলিথিন একত্রিত করে আমরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলি। পলিথিনের এমন ব্যবহার পরিবেশের জন্য চরম হুমকি বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসাইন বলেন, পেয়ারা চাষে কৃষক যে পলিথিন ব্যবহার করছেন তা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তবে কৃষক বর্তমানে অনেক সচেতন, তারা পেয়ারা উঠানোর পর পলিব্যাগগুলো একত্রিত করে আগুনে পুড়িয়ে ফেলছে, নিঃসন্দেহে ভালো দিক। তারপরও পেয়ারাতে পলিথিনের বিকল্প কি ব্যবহার করা যায় আমরা সেই চেষ্টায় আছি।
খুলনা গেজেট/এএজে