বিশ্বকাপ শুরুর আগে থেকেই একের পর এক দুঃসংবাদ ফ্রান্স শিবিরে। একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে আরও একবার বড়সড় ধাক্কা খেল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। এবার চোটের কারণে ছিটকে গেলেন দলটির সবচেয়ে বড় তারকা ও আক্রমণভাগের প্রাণ করিম বেনজেমা।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) কাতারের দোহায় দলের সঙ্গে অনুশীলনে নেমেছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। এ সময় বাঁ পায়ের উরুতে তার পুরনো চোট জেগে ওঠে। শঙ্কা দেখা দিয়েছিল তখনই। অবশেষে এমআরআই করার পর জানা গেল—চোট থেকে সেরে উঠতে অন্তত তিন সপ্তাহ সময় লাগবে তার। অর্থ্যাৎ নিশ্চিতভাবেই শেষ হয়ে গেছে তার কাতার বিশ্বকাপ।
এদিকে বিশ্বকাপ শুরুর আগেই বড় ধরনের চোটের কবলে পড়েন পল পগবা, এনগোলো কান্তে ও প্রেসনেল কিম্পেম্বে। বাধ্য হয়ে তাদের ছাড়াই বিশ্বকাপের স্কোয়াড ঘোষণা করেন কোচ দিদিয়ের দেশমস। এরপর দল ঘোষণার পর চোটে ছিটকে যান লাইপজিগ স্ট্রাইকার ক্রিস্টোফার এনকুকু।
এমনিতেই দুই তারকা মিডফিল্ডার পগবা ও কান্তেকে হারিয়ে মাঝমাঠে নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ দেশমসের কপালে। কেননা এই অভিজ্ঞ দুজনের অনুপস্থিতিতে মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্ব পড়বে অনভিজ্ঞ এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ও আওরোলিয়েন চুমেনিদের ওপর। তার ওপর রক্ষণভাগে নেই কিমপেম্বেও, চোট থেকে পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেননি রাফায়েল ভারানে। যে কারণে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের শেষ পাঁচ ম্যাচে মাঠে নামেননি তিনি।
শোনা যাচ্ছে, বেনজেমা ছিটকে যাওয়ায় দলে তার বদলি হিসেবে ডাক পেতে পারেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল। গত অক্টোবর থেকে উরুর চোটে ভুগছিলেন তিনিও। তাছাড়া ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের একাদশেও নিয়মিত নন এই ফরোয়ার্ড। সব মিলিয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থা ফ্রান্সের। বলা যায় একেবারে শনির দশা লেগেছে দলটির।
২০১৫ সালে সতীর্থের সেক্সটেপ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে জাতীয় দল থেকে নির্বাসিত হন বেনজেমা। সে কারণে ২০১৬ ইউরো ও ২০১৮ বিশ্বকাপে দলে ডাকই পাননি তিনি। তবে রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দারুণ ফর্মে থাকায় গত ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে দলে ফেরানো হয় তাকে।
এরপর থেকে সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। প্রধান স্ট্রাইকার হিসেবেই বিশ্বকাপ খেলতে কাতার এসেছিলেন বেনজেমা। তবে চোটের কারণে শুরুর আগেই বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেল সবশেষ ব্যালন ডি অর জয়ী এ তারকার।
বেনজেমা চোটে পড়া দলে ওপর যে বড় ধাক্কা সেটি অকপটে স্বীকার করে নিলেন কোচ দেশমস। তিনি বলেন, ‘করিম এই বিশ্বকাপকে একটি লক্ষ্য বানিয়েছিল। ওর এ অবস্থার জন্য আমি খুবই মর্মাহত।’ তবে ধাক্কা সামলে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত বিশ্বকাপজয়ী এই কোচ, ‘এই ধাক্কা সত্ত্বেও, আমার দলের ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। আমাদের জন্য যে বিশাল চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে তা মোকাবিলায় আমরা সবকিছু করব।’
এবারের বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে ফ্রান্স। এই গ্রুপে দলটির প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক ও তিউনিসিয়া। সোমবার (২২ নভেম্বর) নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া, ২৬ নভেম্বর ডেনমার্ক ও ৩০ নভেম্বর তিউনিসিয়ার মুখোমুখি হবে তারা।