চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাদ্যগুদামে আসা গমের চালানে ২৮ বস্তা বালু ও সিমেন্টের জমানো টুকরো মিলেছে। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিয়ে আসা ছয়টি ট্রাকে গমের সঙ্গে এসব বালু-সিমেন্টের বস্তা পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী খুলনার সরকার এন্টারপ্রাইজ, জোনাকি এন্টারপ্রাইজ ও সানরাইজ এন্টারপ্রাইজের পরিবহন ঠিকাদারের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্যগুদামে মোট ৩০০ টন গম পাঠানোর কথা ছিল। সেই অনুযায়ী গত শুক্রবার প্রথম চালানে ১০০ মেট্রিক টন গম আসে। রোববার ভোরে দ্বিতীয় চালানের ১০০ মেট্রিক টন গম এলে আনলোডের সময় একটি ট্রাকে বালুভর্তি ৭টি বস্তা পাওয়া যায়। এরপর অন্য ট্রাকগুলো আনলোড করার সময় পাওয়া যায় একে একে বালু ও সিমেন্টের জমাট টুকরো বোঝাই ২৮টি বস্তা।
এ ঘটনার তদন্তে আলমডাঙ্গা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল হামিদ, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এবং জেলা কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক সানজিদা বানুকে নিয়ে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ. কে. এম শহিদুল হক। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্যগুদামের শ্রমিক মুক্তার আলী বলেন, আমরা প্রথমে একটি ট্রাকে কয়েকটি বালুর বস্তা পাই। এরপর আমাদের সন্দেহ হয়। এ সময় সব ট্রাকেই কমবেশি বালুর বস্তা উদ্ধার হতে থাকে। পরে মোট ২৮ বস্তা বালু পাওয়া যায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, সকালে ট্রাক থেকে গম নামানোর সময় বালুর বস্তা দেখতে পান শ্রমিকরা। এরপর সন্দেহ হলে সব ট্রাক থেকে মোট ২৮ বস্তা বালু ও ঢালাইয়ের সিমেন্টের কয়েকটি বড় টুকরো পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে ট্রাকচালক ও হেলপাররা গম বিক্রি করে বালু নিয়ে এসেছে। ছয়টি ট্রাক এবং এগুলোর চালক ও হেলাপারকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিকেল পর্যন্ত একটি গাড়ির গমের ওজন করা হয়েছে। বাকী গাড়ির গম ওজন করলে বোঝা যাবে কী পরিমাণ গম বিক্রি করা হয়েছে নাকি বালুর বস্তা আগে থেকেই ছিল।
চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এ. কে. এম শহিদুল হক বলেন, আজ তিন প্রতিষ্ঠানের দুটি করে মোট ৬টি ট্রাকে ১০০ মেট্রিক টন গম এসেছে। এর মধ্যে ২৮ বস্তা বালু, সিমেন্ট, ইট পাওয়া গেছে। ঘটনার পর আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যে চুক্তি আছে সেই অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।