চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলায় হাশেম আলী (৩৮) নামে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। হাসেম চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বকুল হোসেনের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেল সুপারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিএম তারিক উজ-জামান।
তিনি বলেন, রাত ১২টার দিকে হঠাৎ বুকে ব্যাথা অনুভব করে হাসেম আলী। কারাগারে কর্তব্যরত চিকিৎসক দ্রুত সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরে রাত ২টা ২০ মিনিটের সময় চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দামুড়হুদা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের দরিদ্র এক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন হাসেম আলী। এরপর ওই কিশোরী গর্ভবতী হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে ওই কিশোরী বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট আদালতে মামলা করে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে দামুড়হুদা থানা পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
দামুড়হুদা মডেল থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনোয়ার হোসেন মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্তকালে তিনি বাদী ও তার শিশু কন্যার ডিএনএ টেস্ট করে ২০১৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একমাত্র আসামি হাসেম আলীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
বিজ্ঞ আদালত এ মামলায় তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে হাসেম আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেন। একই রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই কিশোরীর শিশুকন্যার যতদিন বিয়ে না হবে ততদিন তার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
আলোচিত এ মামলাটি রাষ্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন, এপিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মালেক ও আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দীন খাঁন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার শওকত হোসেন মিয়া বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে নীতিমালা অনুযায়ী মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।