চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছিতে ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগ করে শামসুল শেখ নামে (৬০) এক বৃদ্ধকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (০১ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত শামসুল হক চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বেলগাছি গ্রামের ঈদগাপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
নিহত শামসুল শেখের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন বলেন, নাতনি কামনা খাতুনকে আমি নিজে লালন-পালন করে বড় করেছি। সে আমার কাছেই থাকতো। বছর দুয়েক আগে জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের দলিয়ারপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে জাহিদ হাসানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার নাতনি কামনা খাতুনকে বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকেই আমার নাতনিকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতো জাহিদ হাসান। তার সুখের কথা চিন্তা করে যৌতুক বাবদ নগত ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তারপরও থামেনি নির্যাতন। পরে নির্যাতন সহ্য করতে না পারায় ৬ মাস আগে আমার নাতনি বাধ্য হয়ে জাহিদ হাসানকে ডিভোর্স দেয়। মারধর ও নির্যাতন না করার প্রতিশ্রুতি দিলে আবারও তিন মাস পর তাদের বিয়ে হয়। এর কয়েকদিন পর আবারও নির্যাতন করতে থাকে জাহিদ। গত শনিবার (নভেম্বর) দ্বিতীয়বার কামনা খাতুন তাকে ডিভোর্স দেয়।
কামনা খাতুন বলেন, ডিভোর্সের পর থেকেই আমি নানা-নানির কাছে আছি। এরপর থেকে জাহিদ আমাকে ও আমার নানাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। সোমবার (২৯ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে আমার নানা ঘাড়ের ব্যথায় কাতরাতে থাকে। পরে আমি ও আমার নানি গিয়ে দেখি নানার বিছানার পাশে একটি খালি ইনজেকশনের সিরিঞ্জ পড়ে আছে। এ সময় জাহিদ হাসান ও অজ্ঞাত দুজনকে পালিয়ে যেতে দেখি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাড়িতে কোন প্রাচীর না থাকায় নানার ঘরে যে কেউ সহজে ঢুকতে পারে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমার নানার ওপর প্রতিশোধ নিল জাহিদ হাসান। ঘটনার কিছুক্ষণ পর নানা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করি। বুধবার সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাজিদ হাসান বলেন, বুধবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটের দিকে শামসুল শেখের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে সেটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, গত ২৯ নভেম্বর দিবাগত রাতে জাহিদ হাসান ওই বৃদ্ধের শরীরে ইনজেকশন পুশ করেছিল বলে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে আমরা জাহিদ হাসানকে আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছি। আটকের পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে। মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এএ