প্রায় প্রতিদিনই চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে। অথচ দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ছে না কেউ। তার জেরে নিরাপত্তা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার বাঁকা-সুটিয়া সড়কের লতিফ ব্রিকসের সামনে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের ঘটনায় মিঠু জীবননগর বাজার থেকে বাড়ি যাওয়ার সময় বাঁকা-সুটিয়া সড়কের লতিফ ব্রিকসের সামনে ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। তিনি টাকা ও মোটরসাইকেল দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে মারধর করা হয়। তবে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।
এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে একই জায়গায় জীবননগর বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম ছিনতাইয়ের কবলে পড়েন। ছিনতাইকারীরা তাঁকে কুপিয়ে জখম করে মোটরসাইকেল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। তিনি এখন জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন।
আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি যাচ্ছিলাম। আমি মোটরসাইকেলে বাঁকা-সুটিয়া সড়কের লতিফ ব্রিকসের সামনে পৌঁছালে পাঁচ থেকে ছয় জন ছিনতাইকারীরা আমার গতিরোধ করেন। তাঁরা অস্ত্র দিয়ে আমার হাতে কোপ দেন। পরে আমার পালসার মোটরসাইকেল ও কাছে থাকা ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান’।
গত মঙ্গলবার একই স্থান থেকে সুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা তারিক আজিজের পালসার মোটরসাইকেল চুরি হয়ে যায়।
তারিক আজিজ জানান, আমাদের চাষের জমি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাস্তার পাশে ছাপড়ির ভিতর আমার ব্যবহৃত পালসার ডাবলড্রিস্ক লাল কালো রংয়ের মোটর সাইকেল রেখে যায়।
কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে মোটরসাইকেলটি আর সেখানে পেলাম না, পরবর্তীতে আশেপাশে অনেক খোঁজ খুঁজির পর না পেয়ে জীবননগর থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করে রেখেছি। এখন পর্যন্ত থানা থেকে কোন কিছু আমাকে জানানো হয়নি।
গত ৪ জুলাই জীবননগর বাজারের আলেয়া সুপার মার্কেটের অর্পা ফ্যাশানের সাটার ভেঙ্গে নগত টাকা ও মালামাল চুরি করে নিয়ে যায় চোর চক্র।
গত ২৮শে জুন জীবননগর- যাদবপুর সড়কের সীমান্ত ইট ভাটার নিকটে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হন রকিবুল ও শরিফুল দু’জন ব্যক্তি। তাদের নিকট নগত অর্থ ছিনিয়ে নেয়। একই দিনে ভোর রাতে জীবননগর-দত্তননগর রোড়ের বাড়ভাঙ্গা নামক স্থান পিয়াস তৈল পাম্পের নিকটে একটি ইজিবাইক (ব্যাটারী চালিত বহন) গতিরোধ করে ঢাকা থেকে ফেরা হুসোরখালীর তিনজনকে জিম্মি করে তাদের নিকটে থাকা নগত অর্থ ছিনিয়ে নেন।
খবর পাওয়ার পরে থানা থেকে এলাকাতে দু’এক দিনের জন্য পুলিশি টহল চলছে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের কেউ ধরা পড়ছে না।
দিনের পর দিন এমন ঘটনায় আতঙ্কিত ব্যবসায়ী থেকে এলাকাবাসী। ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেক ব্যবসায়ী রাতে বেরোতে চাইছেন না। অবিলম্বে ওই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা জরুরি বলে দাবী করেন এলাকাবাসী।
জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল খালেক বলেন, গতরাতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ একজনকে আটক করেছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। পূর্বশত্রুতার জেরে এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ছিনতাইয়ের শিকার আরিফ একজনকে চেনেন বলে জানিয়েছেন। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনার কেউই থানায় মামলা করে না এবং সঠিক তথ্য আমাদের দেন না সেকারণে সময় লাগে ছিনতাইকারীদের সনাক্ত করতে। তবে আমাদের অভিযান চলমান আছে খুব দ্রুত এই চক্রে সকল সদস্যকে গ্রেফতার করা হবে।
খুলনা গেজেট / আ হ আ