আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বসন্তের কোকিলদের নেতা বানিয়ে লাভ নেই, বরং ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। কারণ দলের সংকটে সুবিধাবাদীদের হাজার পাওয়ারের বাল্ব জ্বালিয়েও পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ফরিদপুরে বিগত কয়েক বছরে সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সুখকর ছিল না। আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে, রক্তপাত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কারা ধ্বংস করেছিল তাদের চিহ্নিত করতে হবে, এর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। চিহ্নিত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ভূমি দস্যুদের পদ দেওয়া যাবে না। যারা নৌকার বিরোধিতা করে নির্বাচন করেছে, তাদের কেনো পদে রাখা যাবে না।
ফরিদপুরকে ‘পদ্মা পাড়ের মায়াবী শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ জেলা বঙ্গবন্ধুর জেলা, এ জেলা শেখ হাসিনার জেলা। এ জেলার উন্নয়নে শেখ হাসিনা সব সময় আন্তরিক।
তিনি বলেন, আগামী জুনের শেষ দিকে পদ্মা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করা হবে। এরপর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া পয়েন্টে দ্বিতীয় পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। নদীর নাব্যতাসহ যাচাই বাছাই করে আমরা দেখব ওখানে সেতু না টানেল সেতু নির্মাণ করা সুবিধাজনক। যেটি সুবিধাজনক হবে, তার কাজ শুরু হবে।
‘শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই’ মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আলোকিত করেছেন। আর বিএনপির মির্জা ফখরুল শুধু অন্ধকার দেখেন। তিনি চোখে ঠুলি পড়ে আছেন।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরের পর শেখ হাসিনার মতো সৎ, যোগ্য ও বলিষ্ট নেত্রী জাতি পায়নি। পাশাপাশি মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতাদের আন্দোলন ও নির্বাচনী ব্যর্থতার জন্য বিএনপির ‘টপ টু বটম’ পর্যায়ের সব নেতার পদত্যাগের পরামর্শ দেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। তার আগে জেলা ও উপজেলার সম্মেলনগুলো শেষ করা হবে। আগামী সম্মেলনের পর নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু হবে। এজন্য জেলা পর্যায়ের দলগুলোকে সংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। গণতন্ত্র বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে হবে। এর জন্য জেলা পর্যায়ে একটি আধুনিক ও স্মার্ট আওয়ামী লীগ গড়ে তুলতে হবে। যাতে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জিততে পারে , শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন এবং দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল চন্দ্র সাহা। সভা পরিচালনা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন।
এর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ সময় জেলা ও ৯ উপজেলার উদ্যোগে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে ৫০টি পায়রা এবং একশ বেলুন ওড়ানো হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। প্রধান বক্তার বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) মির্জা আজম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, ফারুক খান, আব্দুর রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৬ সালের ২২ মার্চ জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।