বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার নালুয়া-বড়গুনী সড়কে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত ওই এলাকায় যানবাহন চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটায় কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি কতিপয় বালু ব্যবসায়ী ও খাল খননের পানি সেচের কারনে এ দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ৩টি বালু উত্তোলনের ড্রেজার মেশিন আটক করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৬/১ প্রজেক্টের আওতায় প্রায় ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চিতলমারী সদর বাজারের ত্রি-মোহনা থেকে (বড়গুনি) মধুমতি নদী পর্যন্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার হক ক্যানেলের পুন:খনন কাজ শুরু হয়েছে। ওই ক্যানেলের পাড় ঘেষা এলজিইডি’র আওতাধীন নালুয়া গ্রোথ সেন্টার থেকে বড়গুনি বাজার পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার পাঁকা সড়ক রয়েছে। ক্যানেল খননের শুরুতেই পানি সেচ দেয়ার সাথে সাথে ওই রাস্তার ১৫০ ফুট কার্পেটিংসহ নদীগর্ভে বিলিন হতে বসেছে। এতে ভাঙ্গন কবলিত ওই এলাকায় যানবহন চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটায় কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা।
ঘটনাস্থল ঘোলা গ্রামের নাজিম শেখ, ছাব্বির মোল্লা ও বড়গুনী গ্রামের মোঃ কামরুজ্জামান এবং মোঃ মহসিন আলী বলেন, সম্প্রতি কতিপয় অসাধু বালু ব্যবসায়ী এই ক্যালেন দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছে। তাই ক্যানেল পুনখননের জন্য পানি সেচ দেয়ার সাথে রাস্তা ভেঙ্গে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। আমরা এই বালুচক্রের বিচার দাবি করছি এবং ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত রাস্তা মেরামত করার জন্য দাবী জানাচ্ছি।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ সরদার বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ইট বোঝাই ভারি ট্রাক চলাচল করে। ক্যানেল খননের জন্য পানি সেচ দেয়ার সাথে সাথে ঘোলা নামক স্থানে রাস্তার ১৫০ ফুট কার্পেটিংসহ রাস্তা নদীগর্ভে বিলিন হতে বসেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে কমপক্ষে ২০ গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মোঃ শামিম আহসান জেভি’র স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ শামিম আহসান বলেন, শুনেছি বালু উত্তোলনের জন্য ওই রাস্তার বিভিন্ন জায়গা ঝুঁকির মুখে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বললে পরবর্তী ববস্থা নিব। চিতলমারী এলজিইডি’র সহকারি উপ প্রকৌশলী মোঃ রাশেদ্দুজ্জামান খান বলেন, পাঁকা সড়কটির ভাঙ্গন কবলিত এলাকার খোঁজ-খবর নেয়া হয়েছে।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম বলেন, খবর পেয়ে (১৫ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনান্থল পরিদর্শন করেছি। তিনটি বালু উত্তোলনের অবৈধ ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ও বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথেও যোগাযোগ করছি। ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তবে বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল আলম মুঠোফোনে জানান, খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে।
খুলনা গেজেট/এ হোসেন