বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রবল জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে শতকরা ৮৫ ভাগ সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। হঠাৎ করে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ফলন্ত সবজি ও ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এখনো পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। অপরদিকে বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হতে না পেরে নিম্মআয়ের মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার জানান, এ উপজেলায় এবছর ২ হাজার ৪৭০ একর জমিতে গ্রীষ্ম কালিন সবজির চাষ হয়েছে। এখানে কমপক্ষে ৩০ হাজার সবজি ও চিংড়ি চাষি রয়েছে। চাষিরা এখানে শসা, করল্লা, উচ্ছে, পুঁইশাক, ঢেড়স, চাল কুমড়া, জিংগা, চিচিংগা, বরবটি, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, ডাটা ও লাউয়ের চাষ করেছেন। এখানের সবজি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে থাকে। এছাড়া এখানে ১১ হাজার ৫৩৫ একর জমিতে রোপা আমন এবং ৭৪ একর পান চাষ হয়েছে।
বর্তমানে এখানে পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। গত ক’দিনের প্রবল জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে এ উপজেলার ৭ হাজার ৪১০ একর জমির রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ২ হাজার ৯৯.৫ একর জমির সবজি ও ৭৪ একর জমির পান। তবে রোদ না ওঠা পর্যন্ত ক্ষতির সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব নয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দড়িউমাজুড়ি গ্রামের সবজি চাষি সবুজ শিকদার, কুরমনি গ্রামের মনোহর বিশ্বাস, প্রশান্ত হালদার, খড়মখালী গ্রামের পরিতোষ মজুমদার, আলমগীর হাওলাদার, সুরশাইল গ্রামের কিশোর বিশ্বাস ও মারুফ খান বলেন, বিভিন্ন এনজিও’র ঋণ নিয়ে ও ধারদেনা করে সবজির চাষ করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে এভাবে ফলন্ত সবজি ও ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় আমরা চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
অপরদিকে, পাটরপাড়া গ্রামের ভ্যান চালক জাহিদ মিয়া, নবের আলী শেখ, সুরশাইলের আকবর আলী, কুরমনির প্রভাত বিশ্বাস, বুট পালিশ ওয়ালা সাধন বৈরাগী, শ্রমিক সুশান্ত বৈরাগী ও সঞ্জয় বৈরাগী জানান, গত ৩/৪ দিনের বৃষ্টির কারণে তারা ঘর থেকে বের হতে পারছে না। আয়-রোজগার বন্ধ থাকায় তাদের চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম