বাগেরহাটের চিতলমারীতে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ইউএনও বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তাকে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলেছেন। তবে ডাঃ জওহর লাল সিংহ দখলের কথা অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, করোনায় বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে চিতলমারী উপজেলার ৯৬নং চরবানিয়ারী পশ্চিমপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের পেছনের প্রায় আড়াই শতক জায়গা ডাঃ জওহর লাল সিংহ নামের এক ব্যাক্তি নেট ও তারকাঁটা দিয়ে ঘিরে দখল করে নিয়েছেন। গত ১০ আগস্ট তিনি নিজে হঠাৎ গ্রামে উপস্থিত হয়ে এই সরকারি জায়গা দখল করেছেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন বাধার তোয়াক্কাই করেননি বলে স্থানীয়রা জানান। এই বিষয়ে গত ১২ আগস্ট চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ সিংহ এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রানী সিংহ।
গোপাল কৃষ্ণ সিংহ ও প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রানী সিংহ বলেন, ‘১৯৮৫ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপনকালে মৃতঃ গৌর চন্দ্র সিংহ এবং মৃতঃ দয়াল চন্দ্র সিংহ যৌথভাবে ৩৩ শতক জায়গা দান করেছিলেন। সেই জায়গা হতে হঠাৎ করে ডাঃ জওহর লাল সিংহ প্রায় আড়াই শতক জায়গা জোর করে দখল নিয়েছেন। এটা অন্যায়। তাই সরকারি বিদ্যালয়ের সম্পত্তি জবরদখল মুক্ত করতে এবং দখলদারের উপযুক্ত শাস্তির জন্য ইউএনওর নিকট তারা লিখিত অভিযোগ করেছেন। এছাড়া বিষয়টি জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
তারা আরো জানান, ডাঃ জওহর লাল সিংহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালের স্পেশাল গ্যাস্ট্রোন্টোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (সার্জারী)।
এ বিষয়ে চিতলমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আমিনুল ইসলাম প্রথমে সাংবাদিকদের জানান, তিনি দখলের কথা শুনেছেন। কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ পাননি।
পরে আবার মোবাইলে জানান, বিষয়টি নিয়ে আগামী রবিবার ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা হবে। তারপর বিস্তারিত তিনি জানাতে পারবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, ওই লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের কোন তথ্য না জানানোর জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। তবে এ অভিযোগ শিক্ষা কর্মকর্তা অস্বীকার করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই বিদ্যালয়ের ভবনের পেছনের অংশ নীল রঙের নেট ও তারকাঁটার বেড়া দিয়ে ঘেরা। ঘেরার ভিতরের অংশে স্কুলের সীমানা পিলার রয়েছে। ওই পিলার পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সম্পত্তি বলে দাবি করেন এসএমসি সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ সিংহ।
ডাঃ জওহর লাল সিংহের ছোট ভাই সাবেক ইউপি সদস্য হিরন্ময় সিংহের মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের সাথে কথা হয় ডাঃ জওহর লাল সিংহের সাথে।
ডাঃ জওহর লাল সিংহ জবর-দখলের কথা অস্বীকার করে জানান, তার নিজের সম্পত্তি ঘিরেছেন। বিদ্যালয়ের বা সরকারি কোন সম্পত্তি তিনি জবর-দখল করেননি।
তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম ওই অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি’র আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম