সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যর মূল্য নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ লক্ষ্যে কৃষি বিপনন অধিদপ্তর ২৯ টি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। শুক্রবার (১৫ মার্চ) কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মাসুদ করিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে কৃষিপণ্য কেনাবেচার জন্য অনুরোধ করা হলো।
কিন্তু বেঁধে দেওয়া দামের পরও বাগেরহাটের চিতলমারীতে সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য পাচ্ছে না ক্রেতারা। রমজানকে সামনে রেখে লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার। চড়ামূল্যে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। রমজানে ছেলে-মেয়ের বায়না মেটাতে না পেরে নিম্মআয়ের মানুষ ঘরে ফিরছেন মলিন মুখে।
রবিবার (১৭ মার্চ) উপজেলা সদর বাজার ঘুরে জানা গেছে, এখানে প্রতিকেজি মুগডাল ১৯০ টাকা, মাসকলাই ১৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, মসুর ডাল (উন্নত) ১৫০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১১০ টাকা, খেসারী ডাল ১২০ টাকা, পাঙাস মাছ ২০০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০ টাকা, গরুর মাংশ ৭৫০ টাকা, ছাগলের মাংশ ১১০০ টাকা, বয়লার মুরগি ২২০ টাকা, সোনালী মুরগি ৩২০, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা, শুকনো মরিচ ৪২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা, আলুু ৩৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, খেজুর ২৫০-৬০০ টাকা, পটল ৯০ টাকা, ঢেড়স ৮০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে।
অথচ সরকারের বেঁেধ দেওয়া প্রতিকেজির খুচরা দাম মুগডাল ১৬৫.৪১ টাকা, মাসকলাই ১৬৬.৪১ টাকা, ছোলা ৯৮.৩০ টাকা, মসুর ডাল (উন্নত) ১৩০.৫০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) ১০৫.৫০ টাকা, খেসারী ডাল ৯২.৬১ টাকা, পাঙাস মাছ ১৮০.৮৭ টাকা, কাতল মাছ ৩৫৩.৫৯ টাকা, গরুর মাংশ ৬৬৪.৩৯ টাকা, ছাগলের মাংশ ১০০৩.৫৬ টাকা, বয়লার মুরগি ১৭৫.৩০ টাকা, সোনালী মুরগি ২৬২, পেঁয়াজ ৬৫.৪০ টাকা, রসুন ১২০.৮১ টাকা, শুকনো মরিচ ৩২৭.৩৪ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০.২০ টাকা, আলুু ২৮.৫৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৩.৩৮ টাকা খেজুর ১৮৫.০৭ সাগর কলা হালি ২৯.৭৮ ও ডিম ৪১.৯৬ টাকা।
কিন্তু এ উপজেলার কোন ক্রেতাই নির্ধারিত এ মূল্যে কোন পণ্য কিনতে পারছেন না।
ভ্যান চালক শহর আলী শেখ, নজরুল শেখ, ঠান্ডা মোল্লা চা দোকানী জাফর আকন বলেন, ‘বর্তমানে যে আয় তা দিয়ে বাজার করতে গেলে কান্না আসে। ছেলে-মেয়েদের বায়না মেটাতে অক্ষম হয়ে মলিন মুখে বাড়ি ফিরতে হয়। তারপরও যদি সরকার নির্ধারিত মূল্যে পণ্য কিনতে পারতাম তাহলে অনেক উপকার হতো।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা জানান, তারা পণ্য গুলো বেশী দামে কিনেছেন। তাই কৃষি বিপনন অধিদপ্তরের নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সম্ভব নয়।
জেলা কৃষি বিপনন কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত বাজার তদারকি চলছে। এই বাজার দর নির্ধারণ হয়েছে শুক্রবার। তাই এ ব্যাপারে সভা হয়নি। আগামী কাল (সোমবার) সভা করে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ব্যাপক ভাবে জেলা জুড়ে বাজার মনিটরিং করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এএজে