বাগেরহাটের চিতলমারীতে শসার দরপতন হয়েছে। উৎপাদিত শসার হঠাৎ দরপতনে চাষিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে কেজিতে কমেছে ২৯ টাকা। অর্থাৎ গত শনিবার (১৭ জুলাই) প্রতি কেজি শসার দাম ছিল ৩৫ টাকা। প্রতি মন এক হাজার ৪০০ টাকা। রবিবার (২৫ জুলাই) চিতলমারী সদর বাজার আড়তে প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৬ টাকা দরে। যার প্রতি মন বিক্রি হয়েছে ২৪০ টাকায়। মাত্র ৭-৮ দিনের ব্যবধানে এ দরপতনে চাষীরা বিমর্ষ হয়ে পড়েছেন। সবজি চাষিদের দাবি, সবাই ব্যস্ত কৃষক ঠকানোর নেশায়। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আর এ অঞ্চলের মানুষেরা সবজির চাষ করবে না।
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মোট ৩ হাজার ২০৩ একর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ৫৫৩ একর জমিতে শসা ও ৫০৮ একর জমিতে করল্লা। বাকি এক হাজার ১৪২ একর জমিতে পুঁইশাক, লাউ, ঢেঁড়স, ডাটা, চিচিংগা, পানিকচু, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া ও বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। কম সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এ উপজেলার চাষিরা শসা চাষে বেশী ঝুঁকেছেন। তাদের কঠোর পরিশ্রমে উৎপাদিত শসা বাজারজাত শুরু হয়েছে। এ উপজেলার উৎপাদিত শসা ও করল্লা ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজিপুর ও কুমল্লিাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের চাহিদা মেটায়। প্রতিদিন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে ট্রাক ভরে এ শসা ও করল্লা বিভিন্ন জেলায় যায়।
উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সবজি চাষি কৃষ্ণ বোস, চর ডাকাতিয়া গ্রামের রমেন মজুমদার, সুজন শেখ, খড়ম খালীর প্রতুল বাড়ই, রবীন মন্ডল, সুনিল মন্ডলসহ শসা বিক্রি করতে আসা অনেক চাষি জানান, করোনার ক্রান্তিকালকে উপেক্ষা করেও তারা ব্যাপক সবজির চাষ করেছেন। বহুকষ্টে উৎপাদিত শসাসহ বিভিন্ন সবজি মোকামে (আড়তে) আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এখানে শসার দাম একেবারে কমেছে। তাই ব্যাংক, এনজিও ও সুদে কারবারিদের দেনায় জর্জরিত সবজি চাষিরা ফসলের হঠাৎ এ দরপতনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা এ দাম কমাটা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কিনা তা তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
বাগেরহাটের শসার ব্যাপারী মতিউর রহমান, চিতলমারীরর ওহাব আলী তরফদার জানান, ঈদে ঢাকার মানুষ গ্রামে গেছেন। তাছাড়া করোনার প্রভাবও পড়েছে। তাই শসার এই অস্বাভাবিক দরপতন।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অসীম দাশ বলেন, আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ বছর শসার এ উপজেলায় শসার বাম্পার ফলন হয়েছে। শহরের মানুষ গ্রামে আসায় দাম কমেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হয়তো চাষিরা শসার ন্যায্যমূল্য ফিরে পাবেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই