বাগেরহাটের চিতলমারীতে শসার দাম কমে গেছে। এখানে প্রতিকেজি শসা ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ দশ থেকে বারো দিন আগে প্রতিকেজি শসা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। বৈরী আবহাওয়ার বহু কষ্টে উৎপাদিত শসার হঠাৎ দরপতনে সবজি চাষিরা হতাশায় পড়েছেন। এভাবে চলতে থাকলে এ বছর তাঁদের উৎপাদন ব্যয় উঠবে কিনা তা নিয়ে তাঁরা মহাশঙ্কার মধ্যে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) দুপুরে উপজেলার চরবানিয়ারী গ্রামের বিশ^জিৎ বড়াল ও খড়মখালী গ্রামের নিপুন হালদান জানান, কম সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এ উপজেলার চাষিরা শসা চাষে ঝুঁকেছেন। তাঁদের কঠোর পরিশ্রমে উৎপাদিত শসা বাজারজাত শুরু হয়েছে। কিন্তু তাঁরা শসা নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন। কারণ বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও বহু কষ্টে উৎপাদিত শসার হঠাৎ দরপতনে তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। প্রথমদিকে এখানে প্রতিমন শসা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মন দরে। এভাবে চলতে থাকলে এ প্রভাব সরাসরি চাষিদের ওপর পড়বে। ভেঙ্গে যাবে এ অঞ্চলের চাষিদের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড।
চিতলমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা অসীম দাশ জানান, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় মোট ৩ হাজার ২০৩ একর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৫৫৩ একর জমিতে শসা ও ৫০৮ একর জমিতে করল্লা। বাকি ১ হাজার ১৪২ একর জমিতে পুঁইশাক, লাউ, ঢেঁড়স, ডাটা, চিচিংগা, পানিকচু, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া ও বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছে। কম সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় এ উপজেলার চাষিরা শসা চাষে বেশী ঝুঁকেছেন। এ উপজেলার উৎপাদিত শসা ও করল্লা ঢাকা, চট্টগ্রাম, গাজিপুর ও কুমল্লিাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষের চাহিদা মেটায়। প্রতিদিন প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকে ট্রাক ভরে এ শসা ও করল্লা বিভিন্ন জেলায় যায়। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও তাঁদের কঠোর পরিশ্রমে উৎপাদিত শসা বাজারজাত শুরু হয়েছে। প্রথমদিকে প্রতিকেজি শসা ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর হঠাৎ শসার দরপতন হয়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি শসা ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে এ বছর উৎপাদন খরচ বেশী। শসার দাম এভাবে চললে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ ব্যাপারে শসার আড়ৎদার সজল বাড়ই, অসীত বাড়ই ও শসার ব্যাপারী দুলাল মন্ডল এবং ইয়াসিন জানান, বর্তমানে বাজারে শসার চাহিদা কম, অন্যদিকে উৎপাদন বেশী। তাই হঠাৎ শসার দরপতন হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ টি আই