অনেক স্বপ্ন নিয়ে ঘর বেঁধে ছিলেন সাথী মন্ডল (১৮)। কিন্তু হাতের মেহেদীর রং মোছার আগেই স্বামী সুশেন মন্ডলের (২৬) পরকীয়ার কারণে সেই ঘরে প্রাণ গেল তার। বাগেরহাটের চিতলমারী থানা পুলিশ প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল অশোকনগর এলাকার স্বামীর বসত ঘর থেকে নববধূ সাথী মন্ডলের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছেন।
পরিবারের দাবি, স্বামীর পরকীয়া সইতে না পেরে সে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পুলিশ নববধূর স্বামী সুশেন মন্ডল ও সুশেনের বৌদি কনিকা মন্ডলকে (৩৫) আটক করেছে। সোমবার সকাল ১০ টায় পুলিশ ময়নাদন্তের জন্য সাথীর মরদেহ বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে এবং আটককৃত দেবর-বৌদিকে আদালতে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনায় মৃতের ভাই উজ্বল বিশ্বাস বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে চিতলমারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের অশোকনগর গ্রামের সুভাষ মন্ডলের ছেলে সুশেন মন্ডল মাস খানেক পূর্বে বাগেরহাট সদর উপজেলার সাহসপুর গ্রামের সাথী মন্ডকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর সাথী বুঝতে পারে তার স্বামী সুশেন মন্ডল পার্শ্ববর্তী রানাপাড়া গ্রামে স্বামীর মেশোতো (খালাত) ভাই শ্যামল মন্ডলের স্ত্রী কনিকা মন্ডলের সাখে পরকীয়া প্রেমে জড়িত। প্রায় প্রতিদিনই সুশেনের সাথে বৌদি কনিকা মন্ডল দেখা করতে এসে বিভিন্ন অজুহাতে সাথীকে বাড়ির বাইরে পাঠিয়ে দিত। এ বিষয়ে সাথী তার স্বামীকে নিষেধ করায় প্রায়ই সে নির্যাতনের শিকার হত। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১ টার দিকে কনিকা মন্ডল সুশেনের সাথে দেখা করতে আসলে অভিমানে সাথী বসত ঘরের ফ্রেমের (ধাড়) সাথে রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে চিতলমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাথীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে বাগেরহাট মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে (দন্ডবিধির ৩০৬ ধারায়) সাথীর স্বামী সুশেন মন্ডল ও সুশেনের বৌদি কনিকা মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে বাগেরহাট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মৃতের ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি