বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বড়বাড়িয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীর এক ছাত্রীর (১৫) শ্লীলতাহানীর অভিযোগে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে মেয়েটির বিধবা মা বাদী হয়ে ওই মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল (উপাধ্যক্ষ) মাওলানা তাজুল ইসলামের ছেলে মোঃ সান্নাউল্লাহ (২০) কে আসামী করে এ মামলা দায়ের করেন। আসামীকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মামলার পর এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে অসহায় ওই পরিবারটিকে বিভিন্ন ধরণের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার বিকেলে ওই ছাত্রীর মা বলেন, ২০০৬ সালে আমার ভ্যান চালক স্বামী সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার মৃত্যুর পর পরের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে চার মেয়েকে বড় করেছি। অনেক কষ্টে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে বড়বাড়িয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীর ছাত্রী। মাদ্রাসার যাওয়া আসার সময় ওই মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা তাজুল ইসলামের ছেলে দ্বাদশ (আলিম) শ্রেণির ছাত্র সানাউল্লাহ আমার মেয়েকে নানা ধরণের প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সম্প্রতি এক গভীর রাতে আমার মেয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘরের বাইরে বের হলে সানাউল্লাহ তার শ্লীলতাহানী করে। এ সময় মেয়ের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে সানাউল্লাহকে আটক করে। কিন্তু ওই রাতেই আসামীকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে আমি সুবিচারের আশায় চিতলমারী থানা ও বাগেরহাট লিগ্যাল এইড অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে এ ঘটনায় আমার করা শ্লীলতাহানীর অভিযোগটি থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ২নং মামলা হিসেবে দায়ের করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য আমাকে নানা ধরণের হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সানাউল্লাহর পিতা বড়বাড়িয়া রহমানিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল (উপাধ্যক্ষ) মাওলানা তাজুল ইসলাম শ্লীলতাহানীর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাকে নিয়ে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র চলছে।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ সর্দার জানান, মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগটি সত্য। স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল ফায়দা লুটতে এ ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনিও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন।
চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর ঘটনায় তার মা বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে আমলে নেই। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নং-২ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামীকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম