বাগেরহাটের চিতলমারীতে এক বৃদ্ধের বাপ-দাদার ভিটেমাটি জোরপূর্বক দখল করা হয়েছে। প্রভাবশালীরা ওই জায়গার দোকানপাট ও গোয়ালঘর উচ্ছেদ করে গড়াবেড়া দিয়ে নুতন ঘর নির্মাণ করেছে। এই শোক সইতে না পেরে মুুজিবুর শেখ (৫৮) নামের ওই ব্যক্তি গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে পরিবারের অভিযোগ। এ অভিযোগের ভিত্তিতে দখলদারদের বিচারের দাবিতে শুক্রবার বিকালে এলাকাবাসী ও মৃতের স্বজনরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
মৃত মুজিবরের ভাই হাবিবুর রহমান ও আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, চিতলমারী উপজেলায় সন্তোষপুর ইউনিয়নের বটতলা গ্রামে আমাদের সীমান্তবর্তী কচুয়া উপজেলাধীন সোনাকান্দ মৌজায় বিআরএস ৫০২ খতিয়ানের ২৮৮২ দাগে ৫৪ শতক জমি রয়েছে। বাপ-দাদার আমল থেকে আমরা তিন ভাই ওই জমি ভোগ দখল করে আসছি। যার বিআরএস রেকর্ড আমাদের নামে।
গত ২৫ নভেম্বর আমাদের জায়গায় অবস্থিত দোকানপাট ও গোয়ালঘর উচ্ছেদ করে প্রতিবেশী প্রভাবশালী মুনছুর আলী শেখ, হেমায়েত উদ্দিন, জাহিদ শেখ, শহিদ শেখ, ফেরদাউস শেখ, মোস্তাক শেখ ও আলতাফ শেখসহ ১২ থেকে ১৫ জন লোক গড়াবেড়া দিয়ে ঘর নির্মাণ করে। বসতভিটা হারানোর এই শোক সহ্য করতে না পেরে আমাদের বড়ভাই আত্মহত্যা করেছে নাকি কেউ মেরে ঝুলিয়ে রেখেছে এটা আমাদের কাছে পরিস্কার নয়। আমরা এই জোরপূর্বক দখলকারীদের দখলকৃত জমি দখলমুক্ত ও তাদের শাস্তির দাবি করছি।
মুজিবরের প্রতিবেশী মোঃ ইলিয়াস শেখ, মান্নান ভূইয়া ও আউয়ুব আলী শেখ বলেন, ওই চক্রটি ভূমিদস্যূ। এরা আদালতের নিষেধাজ্ঞাও মানে না। কিছুদিন আগে এরা আমাদের বিআরএস রেকর্ডীয় জমি আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দখল করেছে। আর এসব দখলবাজীর নেপথ্য নায়ক মুনছুর আলী শেখ। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গ্রামবাসীরা বিচারের দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। ওদের কারণে মুজিবর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোঃ মুনছুর আলী শেখ বলেন, মুজিবরা তিন ভাই আমাদের শরিক। তাদের কাছে আমাদের ৬০ শতক জমি পাওনা আছে। তারা আপোষে ওই জায়গা ছেড়ে দিলে সেখানে দোকানপাট ও গোয়ালঘর সরিয়ে গড়াবেড়া দিয়ে আমরা ঘর তুলেছি।
তবে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক বলেন, পুলিশ খবর পেয়ে মুজিবর শেখের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছে। মৃত মুজিবরের স্বজনরা অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭ টায় মৃত মুজিবরের ভাই আবু বক্কর সিদ্দিক মুঠোফোনে জানান, ময়না তদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে লাশ পৌঁছালে স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। রাতে তার মরদেহ পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়।
খুলনা গেজেট/এনএম