আগামী ২০ সেপ্টেম্বর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। দেখতে দেখতে নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে। দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বাড়ছে শঙ্কা। সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, বড়বাড়িয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার ছেড়া, কলাতলা ইউনিয়নে প্রার্থীর সমর্থদের মারপিটের ঘটনায় শান্তি প্রিয় মানুষের মধ্যে ভীতি কিছুটা ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বড়বাড়িয়া, কলাতলা ও চিতলমারী সদর ইউনিয়নের নিরীহ ভোটাররা এমনটাই জানিয়েছেন।
অপরদিকে, নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর অবস্থান ও সজাগ দৃষ্টিতে রয়েছেন নির্বাচন কমিশন, উপজেলা প্রশাসন ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে তাঁরা সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্র গুলো চিহ্নিত করেছেন। এ উপজেলার ৬৪ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি সধারণ, ৩৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ১৫টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্র। তাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্টু নির্বাচন পরিচালনার লক্ষে মাঠে থাকবেন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট, বিজিবি (বডার গার্ড বাংলাদেশ), বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এমনটাই বলেছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা।
বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের সাধারণ ভোটার মো. আসাদুজ্জামান, মো. রেচকে শেখ, সোহরাব শেখ, কলাতলা ইউনিয়নের ভোটার বুলু মোল্লা, তুহিন শিকদার ও চিতলমারী সদর ইউনিয়নের আবু সাঈদ মুন্সি বলেন, নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই আমাদের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। সদর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর, বড়বাড়িয়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার ছেড়া, কলাতলা ইউনিয়নে প্রার্থীর সমর্থদের মারপিটের পর থেকে আমরা কিছুটা ভীত হয়ে পড়েছি।
আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের অহিদুজ্জামান পান্না, কলাতলা ইউনিয়নের শিকদার মতিয়ার রহমান ও চিতলমারী সদর ইউনিয়নের মো. সাহেব আলী ফরাজী বলেন, ২০ তারিখের নির্বাচনে আমাদের প্রতিটি কেন্দ্রই অধিক ঝুঁকিপূর্ণ (অধিক গুরুত্বপূর্ণ)। ইতোমধ্যে ভাংচুর, মারপিট ও নির্বাচনী আচারণ বিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা পৃথক পৃথক ভাবে এ জন্য রিটানিং অফিসার, নির্বাচন অফিসার ও প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা তাঁদের কাছে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরাই জিতব।
নৌকা প্রতীকের দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়বাড়িয়া ইউনিয়নের মো. মাসুদ সরদার, কলাতলা ইউনিয়নের মো. বাদশা মিয়া ও চিতলমারী সদর ইউনিয়নের মো. নিজাম উদ্দিন শেখ বলেন, অনেক যাচাই বাছাই করে দল আমাদের নমিনেশন দিয়েছেন। নেতাকর্মীরাসহ সাধারণ ভোটাররা আমাদের সাথে আছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। আমরাই নির্বাচিত হব।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আব্দুল মজিদ জানান, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে চিতলমারী সদর, বড়বাড়িয়া ও কলাতলা ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বার (সাধারণ ও সংরক্ষিত) পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি শিবপুর, হিজলা, চরবানিয়ারী ও সন্তোষপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী থাকায় শুধুমাত্র ইউপি (সাধারণ ও সংরক্ষিত) সদস্য পদে নির্বাচন হবে। এ উপজেলায় মোট ৭টি ইউনিয়নে ৬৪ টি ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কেন্দ্র। যার বুথ সংখ্যা ৩০২টি। এ উপজেলায় মোট ভোটার এক লাখ নয় হাজার ১৭৭ জন। এদেরমধ্যে ৫৬ হাজার ৭৫ জন পুরুষ, ৫৩ হাজার ১০১ নারী ও তৃতীয় লিংঙ্গের একজন ভোটার রয়েছে। এ নির্বাচনে ৩০০ শতাধিক প্রার্থী অংশ গ্রহণ করবেন।
চিতলমারী থানার পরিদর্শক (ওসি) এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে পুলিশ সজাগ দৃষ্টিতে রয়েছে। কেউ সহিংসতা ছড়াতে ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে চাইলে তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে আমরা সাধারণ, গুরুত্বপূর্ণ ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্র গুলো চিহ্নিত করেছি। এ উপজেলার ৬৪ টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৩টি সধারণ, ৩৬টি গুরুত্বপূর্ণ ও ১৫টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্র রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. লিটন আলী বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনার জন্য চিঠি এসেছে। সে মোতাবেক বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র পরিদর্শন করছি। তাই শান্তিপূর্ণ, অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্টু নির্বাচন পরিচালনার লক্ষে মাঠে থাকবেন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট, বিজিবি (বডার গার্ড বাংলাদেশ), বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
খুলনা গেজেট/এনএম