বাগেরহাটের চিতলমারীতে আওয়ামী লীগ নেতা খলিফা একরামূল কবির (৬০) কে গাছের সাথে বেঁধে প্রতিপক্ষরা নির্মম ভাবে নির্যাতন চালিয়েছে। হামলাকারীরা এ সময় ওই নেতাকে মাছ মারা ফুলকুচি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে উল্লাস প্রকাশ করে। প্রায় ঘন্টা খানেক ধরে নির্যাতন চালিয়ে তারা তাকে মৃত ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে।
পরে স্থানীয় মহিলারা উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুরুতর আহত ওই নেতাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। তিনি এখন হাসপাতালের বেডে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন।
একজন প্রবীণ ব্যক্তির ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় এলাকার সর্বস্তরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার দুপুরে এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন আহত নেতা একরামূল কবিরে বড় ছেলে ইব্রাহীম হোসেন রাজু।
রাজু আরও জানান, তার বাবা খলিফা একরামূল কবির শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং মা রোজী সুলতানা ৪ নং শিবপুর ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য। মঙ্গলবার সকালে তার বাবা একটি জমি ক্রয়ের জন্য দুই লাখ টাকা নিয়ে কলিগাতী শিকদার পাড়া গেলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে একই এলাকার শাহাজান শিকদার, জেহাদ শিকদার, রোকন শিকদারসহ ২০/২৫ জন লোক হাতুড়ি, লোহার রড ও ফুলকুচি দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়। পরে হামলাকারীরা তাকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে রাখে। এ সময় তার কাছে থাকা ওই দুই লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
ঘটনাস্থল কলিগাতি গ্রামের গৃহবধূ শাহিনা সুলতানা, কৃষক দেলোয়ার শেখ ও বৃদ্ধ বেদার খলিফা জানান, হামলাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় গোটা গ্রামের মানুষ ভয়ে তটস্থ পয়ে পড়েছে।
শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওলিউজ্জামান জুয়েল জানান, খলিফা একরামূল কবির শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। একজন প্রবীণ ব্যক্তির ওপর এ ধরনের বর্বরোচিত হামলার ঘটনায় এলাকার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে টাকা ছিনতাইয়ে ঘটনা অস্বীকার করে শাহাজান শিকদার জানান, কয়েকদিন আগে ইকরাম খলিফার ছেলে রাজুর নেতৃত্বে রাজিব শিকদারের ওপর হামলা হয়। এ সময় হামলাকারীরা রাজিবের কাছে থাকা ৪০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ঘটনার বিষয়ে কোন বিচার না পেয়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে তাদের ছেলেরা ইকরাম খলিফাকে সামান্য মারধর করেছে।
শিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুজ্জামান কাকা মিয়া জানান, হামলার ঘটনা শুনে তিনি চিতলমারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মোঃ ইকরাম খলিফাকে দেখতে যান। তিনি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শরিফুল হক সাংবাদিকদের জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা মোকাবেলায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম