রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) রক্তাক্ত ও দগ্ধ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বলছে, অগ্নিকাণ্ড নয়, এটি হত্যাকাণ্ড। যা রবিবার (৩০ মে) মধ্যরাতের কোনো এক সময় সংঘটিত হয়েছে।
রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) রক্তাক্ত ও দগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি হাসপাতালের কনসালটেন্ট (সনোলজিস্ট) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কলাবাগানের ১ম লেনের ৫০/১, তারেস ডি ক্যাসল অ্যাপার্টমেন্টের তৃতীয় তলার ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার আজিমুল হক বলেন, ডা. সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেনের বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন। তিনি ফ্ল্যাটের দুটি রুম এক তরুণীকে সাবলেট হিসেবে ভাড়া দেন। সকালে সাবলেটে থাকা তরুণী কানিজ সুবর্ণা হাঁটতে বের হয়েছিলেন। হেঁটে আসার পর তিনি বাসায় ফিরে দেখেন চিকিৎসক সাবিরার রুম বন্ধ। রুমের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। পরে তিনি দারোয়ানকে ডেকে চাবি এনে রুমের তালা খুলে দেখতে পান চিকিৎসক সাবিরা বেডের ওপর উপুর হয়ে পড়ে আছেন। ঘরে আগুন লেগেছে ভেবে তারা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়।
ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম এসে দেখে মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। ডিবি এসে তার গলায় একটি আঘাতের চিহ্ন ও পিঠে দুটি আঘাতের চিহ্ন পায়। আমরা তদন্ত করছি। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- সাবলেট থাকা এক শিক্ষার্থী, তার এক বন্ধু, বাড়ির দারোয়ান রমজান ও ডা. সাবিরার ফ্ল্যাটের গৃহপরিচারিকা।
ডিবি সূত্র জানায়, ডা. সাবিরা রহমান দুটি বিয়ে করেছিলেন। তার প্রথম স্বামী চিকিৎসক ছিলেন। তিনি একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। পরে সাবিরা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সাবিরার দ্বিতীয় স্বামী সামসুদ্দিন আজাদ, তিনি ন্যাশনাল ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট। তবে দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না তার। সাবিরার দুই সন্তান রয়েছে। তার আগের স্বামীর ঘরে একটি ছেলে এবং দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে ৯ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ছেলেটি বিবিএ’তে অধ্যয়নরত। মেয়েকে নিয়ে কলাবাগানের ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন সাবিরা। রবিবার রাতে মেয়েটিকে গ্রিন রোডে নানীর বাসায় রেখে এসেছিলেন তিনি। রাতে বাসায় একা ছিলেন সাবিরা।
সাবিরার মামাতো ভাই মো. রেজাউল হাসান বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে এটি একটি হত্যাকাণ্ড। বিষয়টিকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করার জন্য আগুনের ঘটনা সাজানো হয়েছে। আমরা এখনো কাউকে সন্দেহ করছি না। তদন্তের পর পুলিশ বিস্তারিত বলতে পারবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই