ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু শহরের শুড়া এলাকার রিপন আলী পিতা মোঃ জানার উদ্দিন। পেশায় একজন চা বিক্রেতা দিন আনে দিন খায়। পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন একটি মাটির খুপড়ি ঘরে। এক শতক জমির উপর নির্মিত ঘরটিতে ঝিনাইদহ পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির অধিনস্ত হরিণাকুণ্ডু সাব-জোনাল অফিসের আওতায় বছর দশেক আগে ২০১১ সালে (হিসাব নং- ২১৭/১৫০৫) একটি আবাসিক মিটার সংযোগ নেন। বিগত বছরগুলোতে বিদ্যুৎ ব্যবহার ও বিল ঠিকই ছিল বলে তার ধারনা, কিন্তু গত জুন ২০২১ বিলটি দেখে তার চোখ উঠে গেছে কপালে। বিল এসেছে ১৯,০৬৬ (উনিশ হাজার ছেষট্টি) টাকা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমি চা বিক্রি করে সামান্য টাকা উপার্জন করি। সেই হিসেবে ঘরে ২টি খাঁচা ফ্যান ১টি এনার্জি লাইট ও বাহিরে ১টি লাইট ব্যবহার করি। তাতে আমার প্রতিমাসে ৩০০-৪০০ টাকা বিল আসে। এবার এসেছে উনিশ হাজারেরও বেশি বিল। এতো টাকা বিল কিভাবে আসতে পারে? বিলটি দেখে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এমন অভিযোগ আরো অনেক গ্রাহকের। বাড়তি হয়রানির ভয়ে অভিযোগ করেন না অনেকে।
এদিকে ভুক্তভোগী গ্রাহক রিপন এই বিশাল অংকের বিলের কাগজ নিয়ে ঘুরছেন বিভিন্ন দপ্তরে। এ ব্যাপারে তিনি হরিণাকুণ্ডু পল্লী বিদ্যুতের সাব জোনাল অফিস ও পৌরসভা কার্যালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ তদন্তে সোমবার (২৬ জুলাই) হরিণাকুণ্ডু উপকেন্দ্রের এজিএম মাহবুব আলম ও পৌরসভার মেয়র মোঃ ফারুক হোসেন অভিযুক্ত মিটারটি পরিদর্শন করেছেন।
হরিণাকুণ্ডু পৌরসভার মেয়র ফারুক হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী ব্যক্তির বাড়ির পাশে পৌরসভার ড্রেন নির্মাণ কাজ চলাকালে দিনে ২–৩ ঘন্টা করে মাত্র ৫–৬ দিন ওই গ্রাহকের বাসা থেকে একটি ১ হর্স পাওয়ার মোটর ব্যবহার করেছে ঠিকাদার। এতে দুইশত থাকে চারশত টাকা বিল বেশি আসতে পারে। উনিশ হাজার আসতে পারে না। তিনি বিষয়টি নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন বলে জানান।
হরিণাকুণ্ডু পল্লী বিদ্যুৎ সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মাহবুব আলম বলেন, ভুক্তভোগী গ্রাহকের মিটারের রিডিং আশ্চর্যজনক। বিগত দিনগুলো স্বাভাবিক ছিল। বর্তমানে রিডিং বিবেচনায় স্বাভাবিক মনে হচ্ছে। মাঝে কি হয়েছিল মিটার পরীক্ষা করলে জানা যাবে। তবে তদন্তে দেখা গেছে মিটারের গ্রাউন্ডিং খোলা ছিল। গ্রাউন্ডিং খোলা থাকার কারণেও মিটার রিডিং বেশি আসতে পারে। মিটার রিডিং অনুযায়ী বিল সঠিক আছে। সেজন্য বিল পরিশোধ করে মিটার পরীক্ষার জন্য গ্রাহককে আবেদন করতে বলা হয়েছে। মিটার পরীক্ষায় সমস্যা পাওয়া গেলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই