বাজারে চালের দাম আরেক দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে এক মাসে নিত্যপ্রেয়োজনীয় এ দ্রব্যের মূল্য তৃতীয় বারের মতো বাড়ল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা কম দামে ধান কিনে তা গুদামজাত করে রেখেছেন। ফলে বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে। অন্যদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, সরকার অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। যেকারণে দ্রব্যমূল্যের এ উর্ধ্বগতি ভাবিয়ে তুলেছে মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষকে।
খুলনা নগরীর বড়বাজারের কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, এ মাসে চালের দাম এ নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বাড়ল। ফলে ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত মান ভেদে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে পাঁচ থেকে ছয় টাকা। ভালো মানের মিনিকেট সরু চাল যেটি এ মাসের প্রথমদিকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে বর্তমানে সেটি ৬২ টাকায়, একই ভাবে মাঝারি মানের চাল ৫৪ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অনুরূপভাবে স¦র্না ৩৯ থেকে বর্তমানে ৪৪ টাকায়, মোটা ৩৮ থেকে ৪৩ টাকা এবং গাজী ৩৬ থেকে বর্তমানে ৪২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বড়বাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা শিকদার হোসেনের সাথে কথা হয়। তার সংসারে প্রতি মাসে ৫০ কেজি চাল প্রয়োজন হয়। চালের দাম বৃদ্ধির কারণে তিনি আজ একসাথে মাসের প্রয়োজনীয় চাল ক্রয় করতে পারেননি। তাছাড়া অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম বেড়ে যাওয়ায় তিনি সংসারের ব্যয় বহন করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরকার সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। তারা ইচ্ছা করলে অবশ্যই বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
অপরদিকে, নগরীর বাবুখান রোডে রহমত স্টোরে সদাই করতে এসেছিলেন গৃহবধু আসমা খাতুন। ৬ সদস্যের পরিবারে তার মাসে ৬০ কেজি চাল লাগে। দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে তিনি পনের দিনের চাল ক্রয় করেেেছন। বাকীটা পরে কিনবেন।
নগরীর দোলখোলা বাজারে চাল ক্রেতা আলমগীর হোসেন জানান, পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। ব্যয়ের সাথে আয়ের কোন সংগতি খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করে। দিনে যে টাকা আয় করেন তা দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে তাকে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। এটা শুধু আলমগীরের ক্ষেত্রে নয়, এর প্রভাব পড়েছে সীমিত আয়ের মানুষের উপর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বড় বাজারের একজন পাইকারী ব্যবসায়ী জানান, তারা দিনাজপুর ঝিকরগাছা, নাভারন ও শার্শা থেকে চাল আমদানি করেন এবং তা এখানে কমিশন ভিত্তিতে বিক্রি করেন। এসব চালকল মালিক মৌসুমে কম দামে ধান ক্রয় করে গুদামজাত করে রেখে দাম দফায় দফায় বাড়ায়। যেকারণে বাজারে এ অবস্থা। তবে বছরের প্রথম দিকে চালের বাজার কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হতে পারে বলে ঐ ব্যবসায়ীর ধারণা।
খুলনা গেজেট /এমএম