খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৫ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  অন্তবর্তী সরকারের সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক চলছে
  গাজীপুরের জিরানিতে সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
  সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন
কয়রা-বেতগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ নি‌য়ে অ‌নিশ্চয়তা

চার বছরে কাজ ৪৫ শতাংশ, খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগ চর‌মে

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনার কয়রা-বেতগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ সম্পন্ন নি‌য়ে অ‌নিশ্চয়তা দেখা দি‌য়ে‌ছে। এটি রাজধানী ঢাকা ও জেলা শহ‌র খুলনা থে‌কে সুন্দরবন উপকূলীয় কয়রা ও পাইকগাছা উপ‌জেলায় যাতায়া‌তের একমাত্র সড়ক। মেয়াদ ও বরাদ্দ বাড়ার প‌রেও জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়‌কে চার বছরে কাজ হ‌য়ে‌ছে মাত্র ৪৫ শতাংশ। অর্ধেকরও কম কাজ করে মোট বরাদ্দের বেশির ভাগ টাকা তুলে নি‌য়ে পা‌লি‌য়ে‌ছে ঠিকাদার। কাজের নামে সড়কের বিভিন্ন স্থান খুঁড়ে ফেলে রাখায় যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পত‌নের পরের দিন সুকৌশলে কয়রা-বেতগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে নির্মাণ সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি সরিয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টারপ্রাইজ। তারপর থেকে ওই প্রকল্পের কাজ শেষ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

খুলনা সড়ক ও জনপদ বিভাগ (সওজ) সূত্রে জানা যায়, কয়রা-বেতগ্রাম আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি শুরু হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মোজাহার এন্টারপ্রাইজ কার্যাদেশ পায়।২০২২ সালের ৩০ জুন কাজের সময়সীমা ধরা হলেও কয়েক দফা সময় বাড়ানোর সঙ্গে বরাদ্দও বাড়ানো হয়। ৬৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের প্রকল্পটির শুরুতে বরাদ্দ ছিল ৩৩৯ কোটি ৫৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। পরে বাড়িয়ে ৩৭৯ কোটি ৪৮ লাখ ১০ হাজার টাকা করা হয়। এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১৭৮ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে ছিল সড়ক প্রশস্ত, মজবুত ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক সোজা করা, কালভার্ট নির্মাণ, রিজিড পেভমেন্ট নির্মাণ ও সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী আজিম কাওছার জানিয়েছেন, প্রকল্পের সর্বশেষ মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন শেষ হয়েছে। মেয়াদ বাড়াতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে ফের আবেদন করা হয়। ত‌বে তারা আর কাজ করবে না বলে ১৫ আগষ্ট চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছে। এর পর থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের শুরুতেই অনিয়ম করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ৩০টি বাঁক সরলিকরণের কাজ বাদ রেখে কিছু স্থানে কার্পেটিং করেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সেসব স্থানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ৬৪ কিলোমিটার সড়কের অন্তত ৩০টি স্থানে ২০ কিলোমিটার কাজ অসমাপ্ত রাখায় সেখানে কাঁদা-পানি জমে একাকার হয়ে গেছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।

বাংলা‌দেশ মানবা‌ধিকার ব্যুরোর কয়রা উপ‌জেলা শাখার সদস্য স‌চিব কামাল হো‌সেন বলেন, কা‌জের শুরু থে‌কেই ব্যাপক অ‌নিয়ম ছিল। ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ প্রতি‌বাদ করার সাহস পাইনি। জনগ‌ণকে দু‌র্ভো‌গে ফে‌লে ও অর্থ লোপাট ক‌রে কাজ বাদ দেওয়ায় ঠিকাদা‌রি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি অর্থ ফেরত আনার দা‌বি জানান তি‌নি।

এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদার কাজী মোজাহারুল হকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রকল্প পরিচালক ও সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মোঃ আব্দুল কাদের বলেন, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখার বিষয়টিও জানানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!