খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা

চাচাতো বোনের উঠানে পড়েছিল যুবকের লাশ, পাশেই খিচুড়ি রান্না

গেজেট ডেস্ক

শ্বশুরবাড়ির উঠানে পড়ে আছে চাচাতো ভাইয়ের লাশ। হাত ও পা ভাঙা, মাথার চুল কাটা। পাশেই খিচুড়ি রান্না করছিলেন চাচাতো বোন সুমি খাতুন। কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জালাল মোড় এলাকায় বুধবার সকালে এমন ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত যুবকের নাম স্বপন আলী (২৭)। তিনি চুয়াডাঙার দর্শনা উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে। সুমি খাতুন জালাল মোড় এলাকার আসাদ শেখের স্ত্রী।

স্বজনরা জানান, স্বপন ও সুমি সম্পর্কে চাচাতো ভাই -বোন। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল।

পুলিশ ও স্বজনদের ভাষ্য, এই প্রেমের সম্পর্কের কারণে চাচাত বোনের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পিটিয়ে হত্যা করে উঠানে লাশ ফেলে রেখে পালিয়েছে।

সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে পুলিশকে লাশের সুরতহাল করতে দেখা যায়। স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করে। তবে আসাদ ও তার আশপাশের বাড়িগুলোতে কোনো লোকজন নেই। লাশের পাশেই রান্নাঘরের চুলাতে খিচুড়ি রান্না চলছে। চুলার পাশে ডিম ও লাল শাক রয়েছে। সড়কের পাশে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহত স্বপন আলীর বাবা আব্দুর রশিদ।

তিনি জানান, তার ভাতিজি সুমির সঙ্গে স্বপনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সুমি তার ছেলেকে ফোন করে কুমারখালীর শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। তিনি থানায় মামলা করবেন।

এ বিষয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারা খাতুন বলেন, ‌“আমি মারধরের খবর শুনে সকাল আটটার দিকে গিয়ে দেখি অনেক লোকজন। উঠানে পড়েছিল স্বপন আলী। বারবার বলছে, ‘এ সুমি আমাকে পানি দে রে, আমারে হাসপাতালে নিয়ে যা, আমি বাঁচে যাবনে।’ ঘণ্টাখানেক পরে গিয়ে দেখি মারা গেছে, আর সুমি রান্না করছে।”

স্থানীয় কালু শেখ জানান, তিনি রাতে আসাদের বাড়িতে বাঁশ দিয়ে মারপিটের শব্দ ও চিৎকার শুনেছেন। সকালে গিয়ে একজনের লাশ দেখতে পান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, খবর পেয়ে তিনি সকালে গিয়ে দেখেন চুলায় খিচুড়ি রান্না হচ্ছে। আর উঠানে লাশ পড়ে আছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুমি খাতুনের একটি ভিডিও বক্তব্যে জানান, রাত দুইটার দিকে স্বপন তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জানালা ধরে টানাটানি করছিলেন। সে সময় তার ভাসুর শহিদুলসহ স্থানীয়রা তাকে মারপিট করে উঠানে ফেলে রেখে যায়। তিনি সকালে স্বপনের বাড়িতে খবর দিয়ে রান্না করছিলেন।

তাঁর ভাষ্য, স্বপন তাকে পছন্দ করতেন। এ নিয়ে অতীতে অনেকবার সালিশ হয়েছে।

কুমারখালী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. তুহিন শেখ জানান, স্বপন আলী তিন থেকে চার মাস আগেও একবার ওই বাড়িতে এসেছিল। তিনি সালিশ করেছিলেন। গত রাতে আবারও আসলে স্থানীয়রা তাকে জানান। সে সময় তিনি ওই যুবককে মারপিট করতে নিষেধ করে ‘৯৯৯’ এ কল করতে বলেছিলেন।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আকিবুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে আসাদের বাড়ির উঠান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত যুবকের মাথার চুলকাটা ও শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহৃ রয়েছে।

তাঁর ভাষ্য, চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কারণে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

খুলনা গেজেট/ টিএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!