খুলনা, বাংলাদেশ | ১১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  অ্যান্টিগা টেস্ট: শেষ দিনে বাংলাদেশের দরকার ২২৫ রান, হাতে ৩ উইকেট

চাঁদাবাজি’র প্রতিবাদে ভোমরা বন্দরে ৫৩ ভারতীয় পণ্যবাহি ট্রাক আনলোড করেনি শ্রমিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার বিপরীতে এলাকায় ট্রাক প্রতি ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে ভোমরা বন্দরে ঢোকা ৫৩টি পণ্যবাহি ভারতীয় ট্রাক আনলোড করেনি শ্রমকিরা। ঘাজাডাঙ্গায় সিরিয়ালের নামে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদে আন্দোলন অব্যহত থাকায় শনিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টার মধ্যে ভোমরা বন্দরে ঢোকা এসব ভারতীয় ট্রাকের মালামাল আনলোড করতে অস্বীকৃতি জানায় শ্রমিকরা। ফলে পণ্যবাহি ভারতীয় ওই ট্রাকগুলি বন্দরে আটকা পড়েছে।

এদিকে বন্দরসংশ্লিষ্ট কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সহায়তায় ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় ট্রাক প্রতি ৩০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই টাকার মধ্যে ২০ হাজার টাকা ঘোজাডাঙ্গায় এবং বাকিটা ভোমরার অনেকের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়। এই ভাগবাটোয়ারার সাথে জড়িতরা চাঁদাবাজী বন্ধের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলন ব্যাহত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় চাঁদাবাজী বন্ধে ভোমরায় আন্দোলন সমন্বয় কমিটির আহবায়ক বিশিষ্ঠ ব্যবসায়ি রাম কৃষ্ণ চক্রবর্তী বলেন, ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে ভোমরায় আসা কমপক্ষে ৫৩টি ভারতীয় ট্রাক চিহ্নিত হয়েছে। যেকারনে শ্রমিকরা ওই ট্রাকগুলিতে আনা আমদানী পণ্য আনলোড করেনি। ফলে সেগুলো বন্দরে আটকা পড়েছে। এই ট্রাকগুলো গত এক সপ্তাহের মধ্যে ভোমরায় এসেছিল। আমদানীকৃত মালামাল আনলোড করে ফিরে যেয়ে এই সময়ের মধ্যে ফের মালামাল নিয়ে ভোমরা বন্দরে আসাটা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। সে কারণে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সেগুলো আনলোড বন্ধ করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, চাঁদা সবাই গোপনে প্রদান করে। ফলে চাঁদা দিয়ে আসা ট্রাক চিহ্নিত করা অনেকটা কঠিন কাজ। তারপরও কোন ব্যবসায়ীই এই বিপুল পরিমান চাঁদা দিতে চায় না। কিন্তু ভারতীয় চাঁদাবাজদের এদেশীয় এজেন্টদের ভয়ে এখনে অনেকে মুখ বন্ধ করে আসে। তবে দু’একদিনের মধ্যে এটা পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন জানান, ভারতের ঘোজাডাঙ্গায় ট্রাক থেকে চাঁদা আদায়ে সহায়তাকারী এপারের ৩ /৪ জন ব্যক্তি ইতিমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। ওপারে ২০ হাজার টাকা পাঠিয়ে তারাও মোটা অংকের কমিশন পান। যার পরিমান ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। মালামালের ধরণভেদে আদায় করা হয় ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সে টাকার ভাগ নেন অনেক দুর্নীতিপরায়ন ব্যক্তি। ফলে তারা এখন চলমান আন্দোলন বানচাল করতে সম্মিলিতভাবে ষড়যন্ত্র করছে।

ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের আহবায়ক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩০০ ভারতীয় পণ্যবাহী গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভোমরার বিপরীতে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দরের বেসরকারি পার্কিং ইয়ার্ডে সিরিয়ালের নামে বিভিন্ন পন্য বিবেচনায় গাড়িপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা চাঁদা না দিলে তাদেরকে ৩০ থেকে ৪৫ দিন পর্যন্ত বসিয়ে রাখা হয়। এতে আমাদের দেশের আমদানি কারক ব্যবসায়িরা দারুনভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। এর ফলে ভোমরা স্থল বন্দরে রাজস্ব ঘাটতিও দেখা দিচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ি সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে আমাদের এই বন্দরটি ধ্বংস করার পায়তারা চালাচ্ছে। দীর্ঘ ৮ মাস ধরে আমরা চেষ্টা করেছি আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাটি সমাধানের জন্য। কিন্ত সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়ে আমাদের এই কর্মসূচি পালন করতে রাস্তয় নামতে হচ্ছে। দ্রæত সমস্যার সমাধান না হলে আগামী ১ ফেব্রæয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালন করে ভোমরা -ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে আমদানি রপ্তানি স্থবির করে দেওয়া হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!