খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

  ইস্টার সানডে উপলক্ষে ইউক্রেনে ৩০ ঘণ্টা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা পুতিনের
  নারী বিশ্বকাপের মূলপর্বে বাংলাদেশ
  জনগণই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে : মির্জা ফখরুল
  আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সর্বোত্তম: প্রধান উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম-মোংলা রুটে চালু হচ্ছে কনটেইনারবাহী জাহাজ চলাচল

গেজেট ডেস্ক

রপ্তানি খরচ কমাতে দেশে প্রথমবারের মতো অভ্যন্তরীণ রুটে চালু হচ্ছে কনটেইনারবাহী জাহাজ চলাচল। চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি নাগাদ চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরের মধ্যে এই রুটটি চালু হওয়ার কথা জানিয়েছে চট্টগ্রামের শিপ এজেন্ট ‘সি গ্লোরি’। বৃহত্তম খুলনাঞ্চলের পণ্য আমদানি-রপ্তানি সুবিধা বাড়াতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় এই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানটি।

এ বিষয়ে মোংলা বন্দর বার্থ অ্যান্ড শিপ অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘মোংলা বন্দরে কনটেইনার পণ্য আমদানি কম হয়। যেকারণে এখানে খালি কনটেইনার পাওয়া যায় না। আবার চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালি কনটেইনার আনতে গেলে অতিরিক্ত ভাড়া মাশুল দিতে হয়। ফলে এখানে কনটেইনারের ভাড়া বেশি পড়ে। একারণে চট্টগ্রাম-মোংলা রুটে কনটেইনারবাহী জাহাজ চালু হলে সময় ও রপ্তানি ব্যয় কমে আসবে।’’

মোংলা সমুদ্রবন্দরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর। নানা সংকটে থাকার পরেও এটি এখনও একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় ব্যাপক কর্মতৎপরতায় এই বন্দরের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন হয়েছে। বাণিজ্যিক জাহাজের আগমন বাড়ায় শ্রমিকদেরও কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। একই সঙ্গে আয়ও বেড়েছে মোংলা বন্দরের।

তবে নাব্য সংকট ও ব্যবসায়ী সুবিধাকে কাজে লাগাতে পারছে না বন্দরটি। এছাড়া বাড়তি ব্যয়সহ নানা কারণে এই বন্দরে কনটেইনার জাহাজ যাতায়াত করে মাসে একটির কম। অথচ এই অঞ্চলের মাছ, হিমায়িত পণ্য ও পাটসহ নানা ধরনের পণ্য রপ্তানির ব্যাপক সুযোগ রয়েছে।

এই সম্ভাবনাকে ভিন্ন আঙ্গিকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে সি গ্লোরি। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম-মোংলা রুটে ছোট জাহাজে কনটেইনার পরিবহন করতে চায়। চট্টগ্রাম থেকে খালি কনটেইনার নিয়ে মোংলা বন্দর থেকে পণ্য ভর্তি করে আবার চট্টগ্রাম হয়ে বিদেশি পাঠানোই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে এই উদ্যোগে। সম্প্রতি পরীক্ষামূলকভাবে একবার জাহাজ পরিচালনা করে সুফলও মিলেছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়ীরা।

সি গ্লোরির ব্যবস্থাপক মাইনুল হোসাইন বলেন, ‘‘পানগাঁওয়ের মতো চট্টগ্রাম থেকে মোংলা বন্দরে যদি খালি কনটেইনার নিয়ে যাওয়া হয়, তখন প্রসেসগুলো সহজ হবে এবং এতে ব্যবসায় উন্নতি করা সম্ভব। সম্প্রতি পরীক্ষামূলক জাহাজ চলাচলে সুফলও মিলেছে।’’

তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১০০টি কনটেইনার নিয়ে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দরে পরীক্ষামূলক অভ্যন্তরীণ রুট পরিবহন চালানো হয়েছে। এটি সফল হওয়ায় এখন তারা চলতি এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে নিয়মিত আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম-মোংলা বন্দর রুটে কনটেইনার পরিবহন শুরু করবে। এসব কনটেইনারে মাছ, হিমায়িত পণ্যসহ পাট ভর্তি করে চট্টগ্রাম হয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

মোংলা থেকে নিয়মিত সরাসরি ট্রানশিপমেন্ট কনটেইনার যাতায়াতে ব্যয় কম। তবে তা না হওয়ায় ব্যয় এবং সময় দুটোই বাড়ে। সেক্ষেত্রে চট্টগ্রাম হয়ে জাহাজে কনটেইনার আনা-নেওয়ায় যে ব্যয় এবং সময় লাগবে তা অনেকটা কম।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, ড্রাফ লিমিটেশনের (জাহাজ চলাচলের জন্য নির্ধারিত পানির গভীরতা) জন্য মোংলা বন্দরে সেভাবে জাহাজ যেতে পারে না, তাহলে চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে সেগুলো রপ্তানি হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে কনটেইনারের কোনোরকম ঘাটতি থাকে না, শিপিং এজেন্টের চাহিদা অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সেসব পণ্য বিদেশে যেতে পারে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (খুলনা) চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘কনটেইনার সংকটের কারণে আমরা বিদেশে নিয়মিত পণ্য রপ্তানি করতে পারছি না। আমাদের রপ্তানি বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে উভয় বন্দরকে উদার হওয়া উচিত। যেহেতু আমাদের দেশের ভেতর হয়ে চলাচল করবে, সে হিসেবে আমদানিকারক এবং যারা চট্টগ্রাম-মোংলা রুটে জাহাজ চালু করবে তাদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া উচিত। তা না হলে তারা এটা নিয়মিত করতে পারবে না।’’

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে মোংলা বন্দর অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক গতিশীল এবং সম্ভাবনাময়। অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি বাড়ানো হচ্ছে বন্দরের পরিধি। চলমান বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বন্দর ঘিরে এ অঞ্চলের অর্থনীতির আরও উন্নয়ন হবে।’’

চট্টগ্রাম-মোংলা রুটে কনটেইনার পরিবহন কার্যকর হলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও জানান তিনি।

খুলনা গেজেট/জেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!