বিএনপি যদি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেয় তাতে বাধা দেওয়া হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আসুক না হেঁটে হেঁটে যতদূর আসতে পারে। কোনো আপত্তি নেই। আমি বসাব, চা খাওয়াব। কথা বলতে চাইলে শুনব। কারণ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। তবে বোমাবাজি ও ভাঙচুর করলে বাধা দেব, উপযুক্ত জবাব পাবে। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু গণতান্ত্রিক আন্দোলনে কোনো বাধা নেই।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাদের কেন্দ্রীয় নেতাদের যৌথসভায় এসব কথা বলেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নের বিষয় টেনে শেখ হাসিনা বলেন, তিনশ সিটে যদি একটি দল সাড়ে সাতশ মনোনয়ন দেয়, তাহলে তাদের নির্বাচন কী করে হয় ? একজন বিএনপি অফিস থেকে, আরেকজন লন্ডন থেকে, আরেকজন গুলশান অফিস থেকে দিয়েছেন। যারা এভাবে নির্বাচন করে, তারা নির্বাচনে জিতবে কী করে?
আওয়ামী লীগ সবসময় এ দেশের জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাসী জানিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, আমরা সেটা বিশ্বাস করি। সেজন্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে যতটা উন্নতি হয়েছে, সেটা আমাদের আমলেই হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য দুই তৃতীয়াংশ ক্ষমতা নিয়েই সংবিধান সংশোধন করার উদ্যোগ নেয়— যাদের এ ধরনের মানসিকতা, তারাই ভোট চুরি করে।
সমালোনাচকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতায় থাকলে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত হয়, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়, মানুষ ভালো থাকে।
তিনি বলেন, সারাদিন কথা বলার পর বলে আমাদের (বিএনপি) কথা বলতে দেয় না। মিটিং করে লোক হয় না, বলে আমাদের লোক আসতে দেয় না। অভিযোগ তো তারা (বিএনপি) করে। কিন্তু তাদের কাছে লোক আসবে কেন? কোন আশায় আসবে। সেটা হলো বাস্তব কথা, সেটা তো চিন্তা করতে হবে।
আদমশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা খুব একটা বাড়েনি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৬ কোটি ৫০ লাখ প্লাস। সামান্য কিছু হয়তো পরবর্তী সময়ে বাড়বে বন্যাকবলিত এলাকা ধরে। কেউ আমাদের ১৮ কোটি বলে, ১৭ কোটি বলে, আমাদের কিন্তু এত জনসংখ্যা নয়। কাজেই এই মানুষগুলোকে খাবারের ব্যবস্থা করতে পারব। সবই পারব। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ যতক্ষণ ক্ষমতায় আছে সবই পারব। কিন্তু লুটেরারা আসলে কী করবে, সেটা জানি না।
বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রতা সাধনের অনুরোধ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের সঞ্চয়, উৎপাদন বাড়াতে হবে।
মানুষের সব মৌলিক চাহিদা পূরণে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, খুব বড় আকারে হয়তো করতে পারব না। কিন্তু গরিবানা হালে মানুষের দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা, একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই, সুন্দর থাকার ও লেখাপড়ার ব্যবস্থা এটুকু তো করতে পারব।
আবারও বন্যা হওয়ার আভাস রয়েছে জানিয়ে সবাইকে প্রস্তুত থাকার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কার্যালয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, আবদুর রাজ্জাক, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, কামরুল ইসলাম, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ, দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, আবদুস সোবহান গোলাপ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, দেলোয়ার হোসেন, বিপ্লব বড়ুয়া, সেলিম মাহমুদ, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান প্রমুখ।