আগামী ২৬ মে সরাসরি বাংলাদেশের উপকূলে আঘাতে হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হচ্ছে। যা ঘনীভূত হয়ে ধাপে ধাপে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আগামীকালের মধ্যে বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণপশ্চিম ও আশেপাশের এলাকায় একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কোথায় আঘাত হানতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না, নিম্নচাপ হওয়ার পর বলা যাবে কোনদিকে যাবে।
তবে বিশ্বের বিভিন্ন আবহাওয়া মডেলের বরাত দিয়ে কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ঘূর্ণিঝড় `রেমাল’ ২৬ মে সকাল ৬টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে স্থল ভাগে আঘাত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করা শুরু করতে পারে সকাল ৬টার পর থেকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভব্য সময় ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থল ভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি যদি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করে তবে বরিশাল ও চট্রগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশংকা করা যাচ্ছে। বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার; যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বাংলাদেশে উপরে বৃষ্টিপাত শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ মে থেকে, যা ২৮ মে পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের ওপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৫, ২৬ ও ২৭ মে। অপেক্ষাকৃত হালকা পরিমাণে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মে মাসের ২৪ ও ২৮ তারিখে। মে মাসের ২৩ তারিখ থেকেই সমুদ্র উত্তাল শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ।
ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর নামকরণ করেছে ওমান। আরবিতে এর অর্থ বালি। এই নামে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে