সদ্য সমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সাফল্য-ব্যর্থতা ছাপিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন জোর আলোচনা চলছে তাসকিন আহমেদের ঘুম-কাণ্ড নিয়ে। এরই মধ্যে মুখরোচক সব তথ্য উঠে আসছে সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যমে। এবার নিজের ফেসবুক পেজে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিলেন খোদ তাসকিন নিজেই।
সুপার এইটে ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের একাদশে টাইগার এই সহ-অধিনায়কের না থাকা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছিল। সেসময় বিস্তারিত কিছু না জানা গেলেও সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এক খবর জানা যায়। বিসিবির সূত্রের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ম্যাচের দিন দেরিতে ঘুম থেকে উঠায় টিম বাস মিস করেন টাইগার এই পেসার। যে কারণে পরে তাকে ছাড়াই একাদশ সাজাতে বাধ্য হয় টিম ম্যানেজমেন্ট!
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও মন্তব্য করেছেন। এবার ফেসবুকে পোস্টে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন তাসকিন।
পাঠকদের জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে দেওয়া হলো
‘আসসালামু আলাইকুম, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি সম্প্রতি অনলাইনে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে সম্প্রতি শেষ হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপের একটি ঘটনা নিয়ে অনেক হৈচৈ করা হচ্ছে।
প্রথমত, আমি সবাইকে জানাতে চাই যে বেশিরভাগ সংবাদ এবং তথ্য যা ছড়ানো হচ্ছে তা কেবল গুজব এবং আমি আশা করি ভক্তরা এটি সেইভাবে দেখবেন।
দ্বিতীয়ত, আমি ঘটনাটি সেদিন আসলে কী ঘটেছিল তা পরিষ্কার করতে চাই।
আমি স্বীকার করি যে আমি স্বাভাবিকের চেয়ে পরে উঠেছি এবং এর জন্য আমি ইতিমধ্যে পুরো দল এবং ম্যানেজমেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।
আমি সকাল ৮:৩৭ এ উঠেছিলাম এবং ৮:৪৩ এ লবিতে গিয়েছিলাম এবং আমার রাইড প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথে আমি সকাল ৯:০০ এ হোটেল ছেড়েছি। আমি সকাল ৯:৪০ এ স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছি, ম্যাচ টসের ২০ মিনিট আগে সকাল ১০:০০ এ। আমরা সকাল ১০:১৫ এ জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলাম এবং ম্যাচটি সকাল ১০:৩০ এ শুরু হয়েছিল।
এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে এই তথাকথিত ক্রীড়া সাংবাদিকরা গুজবের ভিত্তিতে খবর প্রচার/মুদ্রণ করছে এবং যাচাই না করে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছে যা জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন খেলোয়াড় হিসাবে।
যারা আমাকে চেনেন তারা জানেন আমি আমাদের দেশকে কতটা ভালোবাসি এবং বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কতটা নিবেদিত, উৎসাহী এবং গর্বিত। আমি জানি আমি সময়মতো টিমের বাসে না উঠার একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল করেছি, কিন্তু আমি টসের আগেই স্টেডিয়ামে ছিলাম। আমার চূড়ান্ত দলে নির্বাচিত না হওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত ছিলো। যা সঠিক টিম কম্বিনেশন পাওয়ার সাথে সম্পর্কিত এবং এটি আমার টিম বাসে না ওঠার ব্যর্থতার সাথে সম্পর্কিত ছিল না।
তাই, আমি আশা করি মিডিয়া এবং ক্রীড়া সাংবাদিকরা মিথ্যা গল্প লেখার আগে আরও সতর্কতা অবলম্বন করবেন এবং একটি বিষাক্ত পরিবেশ তৈরি করবেন না। এটি কেবল আমাদের খেলোয়াড়দের ক্ষতি করে না বরং আমাদের দেশের সামগ্রিক চিত্রকে ক্ষুণ্ন করে। আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই সৎ এবং পেশাদার সাংবাদিকতা আশা করি যাতে জাতি হিসেবে এগিয়ে যেতে পারি।
ভবিষ্যতে, আমি আইনি ভাবে এই ধরনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো যাতে কেউ আমার ক্রীড়াবিদ বা মানুষ হিসাবে আমার সুনাম বা অখণ্ডতা ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা না করে।
আমার সকল ভক্তদের ধন্যবাদ তাদের অব্যাহত সমর্থনের জন্য।
খুলনা গেজেট/এনএম