আগাছা উপড়ে ঘর গুছিয়ে স্বাভাবিক সাংগঠনিক কার্যক্রমে ফিরবে খুলনা মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনার পর নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। পাঁচ সহযোগী সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কেন্দ্রে জমা এবং মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা-উপজেলা শাখা সম্মেলনের কার্যক্রম শুরুর নির্দেশে প্রাণসঞ্চারিত হয়েছে তৃণমূলে।
প্রসঙ্গত্ব, গত বছরের ১০ ডিসেম্বর খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানে মহানগর ও জেলা আ’লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে পুনরায় সভাপতি ও এমডিএ বাবুল রানাকে সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা শাখায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশিদকে সভাপতি ও এ্যাড. সুজিত অধিকারীকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার মহানগরীর থানা, ওয়ার্ড এবং জেলা উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সংগঠন ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে দলটির।
মহানগর আ’লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুন্সী মাহাবুর আলম সোহাগ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি’র নির্দেশনায় নতুন আঙ্গিকে সকল ওয়ার্ড, থানা ও সহযোগী সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে আগামীকাল সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাদ মাগরিব দলীয় কার্যালয়ে খুলনা মহানগর আ’লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। বর্ধিত সভায় মহানগর আ’লীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ, থানা, ওয়ার্ড আ’লীগ এবং মহানগর পর্যায়ের সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক এবং সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচিত দলীয় সকল কাউন্সিলরকে উপস্থিত থাকতে আহবান জানিয়েছেন নগর আ’লীগের সভাপতি সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক ও সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা।
তিনি আরও বলেন, বর্ধিত সভায় মুলতঃ সাংগঠনিক আলোচনা হবে। সংগঠনকে আগাছামুক্ত করতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে সভায়। এছাড়া সমসাময়িক প্রেক্ষাপট নিয়েও সভায় আলোচনা হতে পারে। তৃণমূল নেতাকর্মীদের জন্য আসতে পারে দিকনির্দেশণা।
সূত্রমতে, এ মাসে আ’লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে জেলা-উপজেলার সম্মেলনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সে লক্ষ্যে ইতিমধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিজ নিজ বিভাগের কোন কোন জেলায় সম্মেলন হয়নি তার তালিকা করতে বলা হয়েছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সেগুলোর তারিখ নির্ধারণ করা হবে। চলতি সপ্তাহের শেষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
দফতর সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে সম্মেলন না হওয়া জেলাগুলোর নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পর যুগ্ম ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ বিভাগের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জেলাগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করবেন। পাশাপাশি সম্মেলন উপলক্ষে কর্মী সভা, বর্ধিত সভা এবং প্রতিনিধি সভায় যোগ দেবেন।
আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন জানান, সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করতে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে আ’লীগের সম্মেলনের আগে সারাদেশে ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে মাত্র তিনটি জেলার সম্মেলন হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ হওয়ার পর তড়িঘড়ি ২৯টি জেলা সম্মেলন শেষ করা হয়। সম্মেলন হলেও অধিকাংশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সেখানে জেলা কমিটিগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর সম্মেলন করা হবে।
খুলনা গেজেট/এআইএন